‘কতহানে টেনিং দিবার জন্যি গেছি, কেউ নেয় নাই। সবখানেই টাহা চায়। আমি গরিব মানুষ, সরকারি গুচ্ছগ্রামে থাহি, টাহা পামু কই? কুনুহানে টেনিং নিবার পারি নাই। বসুন্ধরা গ্রুপের স্যারেরা আপনাগো দিয়া আমাগো টেনিং দিতাচে।
শ্যাষ হইলে একটা মেশিনও দিব। আমাগো আনন্দ লাগতাচে। মেশিন পাইলে আমাগো নিজেগো জামাকাপুড়ও বানাতে পারব, মাইনসেগো জামাকাপুড় বানাইয়্যাও কয়ডা টাহা কামাইতে পারুম।’ স্বনির্ভর হওয়ার আশা নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর গুচ্ছগ্রামে প্রশিক্ষণ নিতে আসা মাকসুদা বেগম।
শুধু মাকসুদাই নন, বসুন্ধরা শুভসংঘ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ৩৫ জন নারী প্রশিক্ষণার্থীর একই বক্তব্য। তাঁদের কেউ বিধবা, কেউ স্বামী পরিত্যক্তা, কেউ সমাজ থেকে নিগৃহীত। এমন ৩৫ অসহায় নারীকে কর্মক্ষম হিসেবে গড়ে তুলতে বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় মাদারীপুরে সেলাই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয় গত ৩ সেপ্টেম্বর। সেলাই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই নারীরা যেন নিজেদের স্বাবলম্বী করতে পারেন—এই লক্ষ্যে বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ শেষে তাঁদের সেলাই মেশিন প্রদান করা হবে।
প্রশিক্ষণ চলমান রয়েছে পেয়ারপুর আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় এবং জেলা সদরের ২নং শকুনী এলাকায়। দুই স্থানে মোট ৩৫ জন সুবিধাবঞ্চিত অসহায় নারী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন। এ ছাড়া কালকিনি উপজেলায় প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন ১৫ জন অসচ্ছল নারী। তিন মাসের প্রশিক্ষণ শেষে তাঁদের ৫০ জনের হাতে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে সেলাই মেশিন তুলে দেবেন শুভসংঘের প্রতিষ্ঠাতা, প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক ও কালের কণ্ঠ’র প্রধান সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন।
পেয়ারপুর এলাকার বিধবা ইয়াসমিন বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী নাই, ছোড ছোড পুলাপান লইয়্যা মানুষের বাসায় কাম কইরা খাই।
মেশিন পাইলে আর মানুষের বাসায় কাম কইরা খাউন লাগবে না। সেলাইয়ের কাম কইর্যাই সংসার চালাতে পারুম।’ প্রশিক্ষক মিথিলা আক্তার ও চম্পা বেগম বলেন, ‘প্রশিক্ষণার্থীদের আগ্রহ দেখে আমরা অনুপ্রেরণা পাচ্ছি। সবাই মনোযোগী হয়ে কাজ শিখছেন। তাঁদের আগ্রহ দেখে মনে হয় প্রশিক্ষণ শেষে একটি মেশিন পেলে তা দিয়ে কাজ করে তাঁরা স্বাবলম্বী হতে পারবেন। আমরাও আপ্রাণ চেষ্টা করছি নিখুঁতভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাঁদের যোগ্য করে তোলার।’ শহরে প্রশিক্ষণ নিতে আসা রাস্তি ইউনিয়নের লক্ষ্মীগঞ্জ এলাকার আঁখি আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার স্বামী প্রতিবন্ধী। আমি আয়ার কাজ করি। সামান্য কিছু টাকা পাই। দিন আনি দিন খাই। আপনারা যদি ট্রেনিং শেষে আমাকে একটি সেলাই মেশিন দেন, তাহলে আমার সংসার চালাতে অসুবিধা হবে না। বসুন্ধরা গ্রুপের জন্য অনেক দোয়া করি।’
মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদের দুইবারের সাবেক চেয়ারম্যান পাভেলুর রহমান শফিক খান বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপের এমন মানবিক উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই। বসুন্ধরা শুভসংঘের এমন মানবিক কাজের সঙ্গে অতীতেও ছিলাম, এখনো আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব।’ সিনিয়র সাংবাদিক, লোকসংস্কৃতি ও ইতিহাস সন্ধানী লেখক সুবল বিশ্বাস বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপের মতো যদি দেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, সমাজ দরদি ও বিত্তবানরা এ ধরনের মানবসেবায় নিজেদের সাধ্যমতো কল্যাণকর কাজ করতেন, তাহলে অসহায় মানুষগুলো স্বাবলম্বী হতে পারত। বসুন্ধরা গ্রুপের সম্মানিত চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও নন্দিত কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলনসহ বসুন্ধরা গ্রুপের সবার মঙ্গল কামনা করি।’ মাদারীপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাইনউদ্দিন বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপ আপামর জনসাধারণ ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের কল্যাণে যেভাবে কাজ করে যাচ্ছে, তা ব্যাপক প্রশংসার দাবিদার। আশ্রয়ণবাসী ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। বসুন্ধরা গ্রুপ ওই শিশুদের জন্য স্কুল করে দিয়েছে। এখন তারা লেখাপড়া করতে পারছে। নারীদের সেলাই প্রশিক্ষণ দিয়ে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। বসুন্ধরা গ্রুপের সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।’
শাজাহানপুরে বসুন্ধরা শুভসংঘের শীতবস্ত্র বিতরণ
Bashundhara Shuvosangho Distribute Blankets in Shajahanpur
ফেনীতে বসুন্ধরা শুভসংঘের শীতবস্ত্র বিতরণ
Bashundhara Shuvosangho Distribute Blankets in Feni
গাইবান্ধায় বৃদ্ধাশ্রমের অসহায়রা পেলেন বসুন্ধরা শুভসংঘের কম্বল
Helpless People of the Old Age in Gaibandha Receive Blankets from Bashundhara Shuvosangho
বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে মেধাবী শিক্ষার্থীকে আর্থিক অনুদান
Financial Grants to Meritorious Students Under the Initiative of Bashundhara Shuvosangho
শহীদ ৫ সাংবাদিকের পরিবারকে কোটি টাকা সহায়তার ঘোষণা দিল বসুন্ধরা
Bashundhara Group Announces Tk 1cr Aid for Slain Journalists’ Families