রাজধানী ঢাকার উপকণ্ঠ কেরানীগঞ্জে নিজস্ব জমিতে দুটি আলাদা অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ। ৫৬ একর জায়গাজুড়ে ‘বসুন্ধরা স্পেশাল ইকোনমিক জোন লিমিটেড’ নামের অর্থনৈতিক অঞ্চলটি হবে ঢাকা থেকে ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে কেরানীগঞ্জের হাজারীবাগ এলাকায় কাটুরাইল মৌজায়। আর ৫৩ একর জায়গাজুড়ে ‘ইস্ট ওয়েস্ট স্পেশাল ইকোনমিক জোন লিমিটেড’ শিরোনামের অর্থনৈতিক অঞ্চলটি গড়ে উঠবে কেরানীগঞ্জ উপজেলার কোণ্ডা এলাকায়।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চল করার প্রাথমিক অনুমোদন পেয়েছে স্বনামধন্য শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিডিবিএল ভবনে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) কার্যালয়ে বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) মাহবুব হায়দার খানের হাতে প্রাক-যোগ্যতা সনদ তুলে দেন বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) পবন চৌধুরী। এ সময় অন্যদের মধ্যে বেজার নির্বাহী সদস্য এমদাদুল হক, আব্দুস সামাদ, হরিপ্রসাদ পাল, বেজা নির্বাহী বোর্ডের সচিব মোহাম্মদ আইয়ুব, বসুন্ধরা গ্রুপের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফখরুদ্দিন, জনসংযোগ উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল ওয়ায়েদসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বসুন্ধরা গ্রুপের আগে আরো আটটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে অর্থনৈতিক অঞ্চল করার প্রাথমিক অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো একে খান, আবদুল মোনেম লিমিটেড, আরিশা, মেঘনা গ্রুপের দুটি, বে গ্রুপ, আমান গ্রুপ এবং ইউনাইটেডকে অর্থনৈতিক অঞ্চল করার প্রাক-যোগ্যতা সনদ দেওয়া হয়।
বসুন্ধরাসহ এ নিয়ে ১০টি বড় বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানকে অর্থনৈতিক অঞ্চল করার প্রাথমিক অনুমোদন দেওয়া হলো।
গতকাল প্রাক-যোগ্যতা সনদ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা গ্রুপের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফখরুদ্দিন বলেন, প্রস্তাবিত দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে তেল পরিশোধনাগার, গ্যাস সিলিন্ডার তৈরি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, সিরামিক ও ওষুধ শিল্প গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। একই সঙ্গে জাহাজ শিল্প, ইস্পাত, কাগজ, পোশাক, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শপিং মল, হোটেল ও মহিলা হোস্টেলও নির্মাণ করা হবে। প্রস্তাবিত দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভারী ও মাঝারি শিল্প-কারখানা স্থাপিত হলে সেখানে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৪০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে জানান মোহাম্মদ ফখরুদ্দিন।
অনুষ্ঠানে বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, ‘দেশের অর্থনীতিতে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশে এখন মোট জিডিপির যে ২৯ শতাংশ বিনিয়োগ হয়, তার সিংহভাগই আসে বেসরকারি খাত থেকে। কিন্তু দেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) তেমন গতিশীল নয়। অথচ পাশের দেশ মিয়ানমারে প্রতিবছর ৯০০ কোটি ডলার এফডিআই আসে। বাংলাদেশে আসে মাত্র ২০০ কোটি ডলার।
দেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়াতেই সরকার অর্থনৈতিক অঞ্চলের ওপর জোর দিয়েছে।’ পবন চৌধুরী বলেন, আশির দশকে ইপিজেড ও পরবর্তী সময়ে কোরিয়ান ইপিজেড স্থাপিত হলেও তেমন বিনিয়োগ আসেনি। কোরিয়ান ইপিজেডে মাত্র ১১ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। অন্যদিকে আটটি ইপিজেডে চার লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। বেজার মাধ্যমে অর্থনৈতিক অঞ্চলে আগামী ১৫ বছরে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের স্বপ্ন দেখছে সরকার।
পবন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে বসুন্ধরা গ্রুপ একটি প্রতিষ্ঠিত ও শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ। তাদের সেবা খাত, আবাসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা রয়েছে। অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করে প্রতিষ্ঠানটি সফল হতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন পবন চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ৫৬ একর জায়গাজুড়ে ‘বসুন্ধরা স্পেশাল ইকোনমিক জোন লিমিটেড’ শিরোনামের অর্থনৈতিক অঞ্চলটি হবে ঢাকা থেকে ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে হাজারীবাগ এলাকায় কাটুরাইল মৌজায়। আপাতত ৫৬ একরের মধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে সেখানে ২২৩ একর পর্যন্ত সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে, যার অংশ হিসেবে বসুন্ধরা গ্রুপ ভূমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এ ছাড়া ‘ইস্ট ওয়েস্ট স্পেশাল ইকোনমিক জোন লিমিটেড’ শিরোনামের অর্থনৈতিক অঞ্চলটি গড়ে উঠবে কেরানীগঞ্জ উপজেলার কোণ্ডা এলাকায় ৫৩ একর জায়গার ওপর। পরবর্তী সময়ে এ অর্থনৈতিক অঞ্চলটি সম্প্রসারণ করে ২১৮ একর জমির ওপর করা হবে। এখানেও জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। সব মিলিয়ে ৪৪১ একর জমিতে দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চল করবে বসুন্ধরা গ্রুপ।
মাহবুব হায়দার খান বলেন, বসুন্ধরা স্পেশাল ইকোনমিক জোন মূলত পেট্রোলিয়াম অয়েল রিফাইনারি করার জন্য তৈরি করা হচ্ছে। বাংলাদেশে একমাত্র ইস্টার্ন রিফাইনারি নামে সরকার পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান থাকলেও সময়ের ব্যবধানে সেটি অনেকটাই উৎপাদন ক্ষমতা হারিয়েছে। এমন বাস্তবতায় বসুন্ধরা গ্রুপ দেশে রিফাইনারি সেক্টরে কাজ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তা ছাড়া অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য বেজা যেসব প্রণোদনা ঘোষণা করেছে, সেগুলো দেখে বসুন্ধরা গ্রুপ অর্থনৈতিক অঞ্চল করতে উদ্বুদ্ধ হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, প্রাথমিকভাবে বসুন্ধরা গ্রুপকে লাইসেন্স দেওয়া হলো। শর্ত পূরণ করতে পারলে তাদের পূর্ণাঙ্গ লাইসেন্স দেওয়া হবে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে পরিবেশের ছাড়পত্র, নকশা প্রণয়নসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছে বসুন্ধরা গ্রুপ। চূড়ান্ত লাইসেন্স পাওয়ার পর শুরু হবে আসল কর্মযজ্ঞ। বসুন্ধরা গ্রুপ বলছে, দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চলই হবে আন্তর্জাতিকমানের ও পরিবেশসম্মত। এর আগে গত বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গভর্নিং বোর্ডের চতুর্থ সভায় বসুন্ধরা গ্রুপের দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চল অনুমোদন দেওয়া হয়।
SOURCE : কালের কণ্ঠটঙ্গীতে আগুনে নিহত ৩ ফায়ার সার্ভিস কর্মীর পরিবারের পাশে সায়েম সোবহান আনভীর, চেয়ারম্যান এবিজি
Chairman of ABG Sayem Sobhan Anvir Stands with Families of Firefighters who Lost their Lives in The Tongi Fire
বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদমুক্ত ঋণ বিতরণ, সচ্ছলতার স্বপ্ন ২ শতাধিক নারীর
Bashundhara Foundation’s Interest-Free Loans Bring the Dream of Prosperity to Over 200 Women
বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে চরফ্যাশনে সেলাই মেশিন বিতরণ
Bashundhara Shuvashangha Distributes Sewing Machines in Charfassion
সড়কের চিত্র বদলে দিতে ব্যবহৃত হচ্ছে বসুন্ধরার বিশেষ বিটুমিন
সীমান্তবর্তী নারীদের পাশে বসুন্ধরা গ্রুপ
Bashundhara Group Stands Beside Border-Area Women
বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় স্বপ্নপূরণের আশা