ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছিলেন খাদিজা আক্তার রুম্পা (২২)। এসএসসিতে জিপিএ ৫ পেয়েও দরিদ্রতার কারণে উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলা সদরের সাহাপাড়া এলাকায় থাকেন তাঁরা। বাবা রফিকুল ইসলাম পেশায় একজন ভ্যানচালক।
অভাবের সংসারে তিন বেলা খাওয়া যেখানে কষ্টকর, সেখানে মেয়েকে পড়ালেখা করানো রফিকুলের কাছে বিলাসিতা। তাইতো এসএসসি পাসের পরই মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেন। স্বামী একই উপজেলার খুঞ্জিয়াপাড়া মহল্লার রাজমিস্ত্রির সহকারী। দিনে যে আয় করেন, তা দিয়ে কোনো রকমে সংসার চলে তাঁদের।
কিন্তু খাদিজার ইচ্ছা নিজের পায়ে দাঁড়ানোর। পথ খুঁজতে থাকেন খাদিজা। অভাবের মাঝেও কাজ করার প্রবল আগ্রহ দেখে তাঁর পাশে দাঁড়ায় বসুন্ধরা শুভসংঘ। খাদিজার দুঃখী জীবনের গল্প শোনার পর শুভসংঘের বন্ধুরা তাঁকে সেলাই প্রশিক্ষণের জন্য বাছাই করেন।
স্বপ্ন ছিল নিজের পায়ে দাঁড়ানোর। খাদিজার সেই স্বপ্নপূরণের সারথি হয় বসুন্ধরা গ্রুপ। তিন মাস খাদিজাকে বিনা মূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে একটি সেলাই মেশিন দেওয়া হবে। সেই মেশিনের চাকার সঙ্গে ঘুরবে খাদিজার ভাগ্যের চাকা। শুধু খাদিজাই নন, তাঁর মতো আরো ২০ জন অসচ্ছল অসহায় নারীকে বিনা মূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলা বসুন্ধরা শুভসংঘের বন্ধুরা।
বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় তিন মাসের প্রশিক্ষণ শেষে তাঁদের হাতে সেলাই মেশিন তুলে দেবেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক ও কালের কণ্ঠ’র প্রধান সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন। ক্ষেতলাল সংগীতালয় মিলনায়তনে তিন মাসের সেলাই প্রশিক্ষণে নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন খাদিজাসহ মোট ২০ নারী।
খাদিজা বলেন, ‘অভাবের সংসারে ভালো রেজাল্ট করেও পড়ালেখা করতে পারিনি। এখন আমি নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই। সেলাই প্রশিক্ষণ শেষে একটি টেইলারিং দোকান খুলতে চাই। এ জন্যই আমি সেলাই প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছি। বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে বিনা মূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণে আমি সুযোগ পাব, এটি স্বপ্নেও ভাবিনি। এখন বসুন্ধরা গ্রুপ থেকে একটি সেলাই মেশিন পেলে আমার জীবনের উদ্দেশ্য সাধন করতে পারব। আমি স্বাবলম্বী হতে পারব। বসুন্ধরা গ্রুপের কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ ও ঋণী। আমি দোয়া করি, মহান আল্লাহ যেন বসুন্ধরা গ্রুপের সবার মঙ্গল করেন।’
উপজেলা সদর থেকে দুই কিলোমিটার দূরের ইটাখোলা বাজার থেকে প্রশিক্ষণ নিতে এসেছেন আঁখি বাশফোঁড় (২০)। তাঁর বাবা পরিচ্ছন্নতাকর্মী। তিন ভাই-বোনের মধ্যে আঁখি মেজো। বড় বোনের বিয়ে হওয়ার পর ছোট ভাই ও মা-বাবার সঙ্গেই থাকেন আঁখি। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ালেখাও করেছেন। অভাবের সংসারে আঁখির ইচ্ছা স্বনির্ভর হয়ে মা-বাবাকে সহযোগিতা করা। কিন্তু স্বনির্ভর হওয়ার মতো অবস্থা তাঁদের নেই। পারিবারিক এমন দুরবস্থার কথা জেনে আঁখির পাশে দাঁড়ায় বসুন্ধরা শুভসংঘ। আনন্দে আত্মহারা আঁখি বলেন, ‘আমার এমন বিপদে বসুন্ধরা গ্রুপ পাশে দাঁড়িয়েছে। সৃষ্টিকর্তা তাদের ভালো করবেন।’
খাদিজা বা আঁখি নন, সংসারের এমন অভাব-অনটনের গল্প প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া প্রতিটি নারীরই। তাঁদের কেউ স্বামী পরিত্যক্তা, কেউ বা আয় করতে না পারা স্বামীর সংসারে বোঝা হয়ে বেঁচে আছেন, আবার কেউ বা মা-বাবার কষ্টের বোঝা লাঘবে আয়ের পথ খুঁজে না পেয়ে চরম হতাশায় ভুগছেন। ক্ষেতলাল বসুন্ধরা শুভসংঘের বন্ধুরা বিভিন্ন দিক যাচাই-বাছাই করে তাঁদের সেলাই প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া ২০ নারীর স্বাবলম্বী হওয়ার পথ সুগম করে দিয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ। তাঁরা স্বপ্ন দেখছেন বসুন্ধরা গ্রুপের সহযোগিতা নিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর। সেই সঙ্গে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি তাঁর এই মহানুভবতার জন্য প্রাণ ভরে দোয়া করছেন।
SOURCE : কালের কণ্ঠসিরাজগঞ্জে বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা
Bashundhara Shuvosangho Hosts Medical Camp in Sirajganj
কুমিল্লায় ২০০ জন অসচ্ছল নারীকে সেলাই মেশিন প্রদান করে বসুন্ধরা শুভসংঘ
Bashundhara Shuvosangho Provide 200 Poor Women Sewing Machines in Cumilla
সবুজ বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করছে বসুন্ধরা শুভসংঘ
Bashundhara Shuvosangho Working to Build Green Bangladesh
চট্টগ্রামে বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে সেলাই প্রশিক্ষণকেন্দ্র উদ্বোধন
Bashundhara Shuvosangho Opens Sewing Training Centre in Ctg
বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলে মানুষ হওয়ার দীক্ষা নিচ্ছে সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা
Bashundhara Shuvosangho School is Lighting up Shoal in Kurigram