পাঁচ বছর বয়সে বাবা-মা হারায় আবদুর রাহিম। পড়ালেখায় খুব আগ্রহ তার। কিন্তু শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় কোনো স্কুলই তাকে ভর্তি করাতে রাজি হয়নি। এ অবস্থায় এগিয়ে আসে বসুন্ধরা স্পেশাল চিলড্রেন ফাউন্ডেশন। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। অনর্গল ইংরেজিতে কথা বলা ৮ বছর বয়সি আবদুর রাহিমের স্বপ্ন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়া।
গতকাল ফাউন্ডেশনের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বসুন্ধরা পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে আয়োজন করা হয় ‘এসো মিলি সবে প্রাণের উৎসবে...’ শীর্ষক আনন্দ উৎসবের। সেখানে হুইল চেয়ারে বসে অনর্গল ইংরেজিতে নিজের পরিচয় ও স্বপ্নের কথাগুলো বলে যান রাহিম।
ঝরঝরে ইংরেজিতে বলতে থাকেন- “I”m Abdur Rahim. I”m an orphan. My father died of liver jaundice and my mother died of cancer when I was five years old... I wanted to studz, but because of my physical condition, no school admitted me... One day I found Bashundhara Special Children Foundation. Then my life changed... I want to be a computer engineer... ”
অনুষ্ঠানস্থলে শুধু আবদুর রাহিমই নয়, নিজের দুর্বলতাকে শক্তিতে রূপান্তরের প্রমাণ দেয় আরও অনেক শিশু। কেউ কোরআন তেলাওয়াত করে, কেউ গান গেয়ে, কেউ নৃত্য পরিবেশন করে, কেউ আবার সুনিপুণ অভিনয়ে মুগ্ধ করে অতিথিদের। অনুষ্ঠানস্থলের পাশে প্রদর্শনী স্টলে সাজিয়ে রাখা ছিল শিশুদের হাতে তৈরি শাড়ি, অলংকার, নকশিকাঁথা, খেলনা ও ঘর সাজানোর নানা উপকরণ। ছিল নান্দনিক অনেক চিত্রকর্ম। যাদের হাতের ছোঁয়ায় এসব শিল্পকর্ম, তাদের কারও বয়স পাঁচ বছর, কারও বা ১০। তবে প্রত্যেকেই শারীরিক বা মানসিকভাবে অপরিণত।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুগুলোর সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান, বসুন্ধরা স্পেশাল চিলড্রেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ও বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক ইয়াশা সোবহান। এ সময় ফাউন্ডেশন ও বসুন্ধরা গ্রুপের কর্মকর্তা, রংপুর রাইডার্স টিম, ফাউন্ডেশনের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবক ছাড়াও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ইয়াশা সোবহান, ফাউন্ডেশনের অধ্যক্ষ শায়লা শারমিন, ইনচার্জ মেজর মোহসিনুল করিম ও কয়েকজন অভিভাবক তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান অনুষ্ঠানস্থলে এসেই ঘুরে ঘুরে শিশুদের খোঁজখবর নেন। এ সময় শিশুরা তাঁকে জড়িয়ে ধরে। তিনিও পরম ¯েœহে তাদের আদর করেন।
ইয়াশা সোবহান বলেন, ২০১৭ সালে মাত্র চারজন প্রতিবন্ধী শিশুকে নিয়ে ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরু করি। এখন সাড়ে চার শ শিক্ষার্থী এখানে বিনা খরচে লেখাপড়ার পাশাপাশি নিজের কাজ নিজে করা, সেলাই, গান, নৃত্য, আবৃত্তি, বিভিন্ন হাতের কাজ শিখছে। সমাজের মূল ধারার সঙ্গে মানিয়ে নিতে নিজেদেরকে যোগ্য করে গড়ে তুলছে। এই যাত্রায় আমি সব সময় বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহানকে পাশে পেয়েছি। সম্প্রতি বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান ফাউন্ডেশনের জন্য কেরানীগঞ্জের রিভারভিউ প্রকল্পে এক হাজার শিক্ষার্থীর সব ধরনের সুযোগসুবিধাসহ একটি স্থায়ী ক্যাম্পাস উপহার দিয়েছেন। এ ছাড়া বসুন্ধরা টিস্যুর প্রতি বক্স বিক্রি থেকে ১ টাকা এই ফাইন্ডেশনের তহবিলে দেওয়া হয়।
ইয়াশা সোবহানের বক্তব্য শেষ হতেই স্টেজে এসে তাঁকে জড়িয়ে ধরে ফাউন্ডেশনের শিক্ষার্থীরা। তারা ভাঙা ভাঙা কণ্ঠে চিৎকার করে বলতে থাকে, আমরা আপনাকে ভালোবাসি, আপনাকে অনেক মিস করি। ইয়াশা সোবহানও মাতৃস্নেহে অনেকক্ষণ জড়িয়ে ধরে রাখেন শিশুগুলোকে। এ সময় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
অনুষ্ঠানে ফাউন্ডেশনের সব শিক্ষার্থীর জন্য উপহার নিয়ে হাজির হয় রংপুর রাইডার্স টিম। উপহার দেওয়ার পাশাপাশি স্টেজে উঠে শিশুদের সঙ্গে ফটোসেশন করেন তারা। এক পর্যায়ে সাফওয়ান সোবহানকে পাশে নিয়ে শিশুগুলোর সঙ্গে কেক কাটেন ইয়াশা সোবহান।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অতিথিদের মুগ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। শুরুতেই কাজী নজরুল ইসলামের ‘কারার ঐ লৌহ কপাট... ভেঙে ফেল কর রে লোপাট...’ বিদ্রোহী গানটির সঙ্গে নেচে মঞ্চ মাতায় ১১ জন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী। তাদের চোখে-মুখে তখন ফুটে ওঠে বিদ্রোহ ও অজেয়কে জয় করার নেশা। এরপর একে একে আরও অনেক গান, নাচ, নাটক পরিবেশন করে শিক্ষার্থীরা।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ফাউন্ডেশন থেকে শুধু লেখাপড়াই নয়, ফিজিওথেরাপি, স্পিচ থেরাপি, ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপিসহ বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের যা যা প্রয়োজন সব সরবরাহ করা হয়। অনেক মা তার বাচ্চার মুখ থেকে প্রথম মা ডাক শুনতে পেয়েছে ফাউন্ডেশনে বাচ্চাকে দেওয়ার পর। শিক্ষার্থী ইরার মা বলেন, পাঁচ বছর বয়সে তার বাচ্চাকে ফাউন্ডেশন স্কুলে দেন। তখন ইরা কথা বলতে পারত না। ঘাড় বাঁকা ছিল। ফিজিওথেরাপিতে সে এখন সুস্থ। স্বাভাবিকভাবে কথা বলে, স্কুলে যায়, লেখাপড়া করে।
SOURCE : বাংলাদেশ প্রতিদিনশায়েস্তাগঞ্জে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মাঝে বসুন্ধরা শুভসংঘের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ
Bashundhara Shuvosangho Distributed Food Items Among Underprivileged People in Shayestaganj
আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা ‘কুরআনের নূর- পাওয়ার্ড বাই বসুন্ধরা’ আসরের সমাপনী
"Qur'an-er Noor - Powered by Bashundhara" Int'l Hifzul Qur'an Competition Closing Ceremony is Held
সৈয়দপুরে বসুন্ধরা শুভসংঘের সেলাই মেশিন পেলেন অসচ্ছল ২০ নারী
20 Poor Women in Syedpur Receive Sewing Machines from Bashundhara Shuvosangho
Bashundhara Group's Assistance Became a Means of Survival for 20 Women
বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তা বেঁচে থাকার অবলম্বন পেলেন ২০ নারী
গোবিন্দগঞ্জে বসুন্ধরা শুভসংঘের ইফতারসামগ্রী বিতরণ
Bashundhara Shuvosangho Distributes Iftar in Gobindaganj