করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) আক্রান্তের চিকিৎসায় চালু হলো দেশের বৃহত্তম আইসোলেশন সেন্টার। ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) নির্মিত ২০১৩ শয্যার হাসপাতালটি গতকাল ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান। এ সময় বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহানও উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, কভিড-১৯ বিপর্যয় শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং সরকারের যত দিন প্রয়োজন শেষ না হবে তত দিন বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে আইসিসিবিকে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে। বসুন্ধরার কাছ থেকে আইসিসিবির সব স্থাপনা বুঝে নিয়ে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালে রূপ দিতে ১২ এপ্রিল কাজ শুরু করে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর (এইচইডি)। জনবল নিয়োগসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষে গতকাল চিকিৎসাসেবার জন্য খুলে দেওয়া হয় হাসপাতালটি।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক এবং নিউজ টোয়েন্টিফোর ও রেডিও ক্যাপিটালের সিইও নঈম নিজাম, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, বসুন্ধরা গ্রুপের গণমাধ্যম উপদেষ্টা আবু তৈয়ব, বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা সাজ্জাদ হায়দার ও আইসিসিবির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এম এম জসীম উদ্দিন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান, সিরাজুল ইসলাম, আইসিসিবি হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. এহসানুল হক, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ওসমান সরোয়ার, ডেইলি সান সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী, বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সম্পাদক জুয়েল মাজহারসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতর, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর ও বসুন্ধরা গ্রুপের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘বসুন্ধরা বাংলাদেশের স্বনামধন্য বড় শিল্পগোষ্ঠী। দেশের প্রতিটি সেক্টরে তাদের বিচরণ। আমরা আনন্দিত করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় তারা এগিয়ে এসেছেন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে এত বড় স্থাপনাটি কভিড রোগীর চিকিৎসার জন্য দিয়েছেন। তাদের সহযোগিতায় আমরা এত বড় আইসোলেশন সেন্টারটি নির্মাণ করতে পেরেছি। এখানে বেড আছে ২ হাজার ১৩টি। অক্সিজেন, ভেন্টিলেশন সুবিধাসহ আরও ৭১টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে। এটা বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ আইসোলেশন সেন্টার। এই সেন্টারটি করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় অনেক বড় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।’ তিনি বলেন, ‘এখনো রাস্তায়, ফেরিঘাটে, যানবাহনে জটলা দেখছি। এতে সংক্রমণ বাড়ার যে শঙ্কা করেছিলাম তা সত্যে পরিণত হয়েছে। বাইরে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে পরিস্থিতি মোকাবিলা দুষ্কর। এজন্য লকডাউন, কোয়ারেন্টাইন বাস্তবায়নের দায়িত্বে যে সংস্থাগুলো, তাদের আরও তৎপর হতে হবে।’ সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, হাসপাতালে পর্যায়ক্রমে জনবল নিয়োগ করা হচ্ছে। প্রথমে ৫০০ রোগীর চিকিৎসার জন্য জনবল নিয়োগ করা হয়েছে। রোগীর ওপর ভিত্তি করে পর্যায়ক্রমে জনবল বাড়ানো হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান বলেন, ‘আমরা সুষ্ঠুভাবে হাসপাতালটি করতে পেরেছি, এটা বড় আনন্দের। এজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাই। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই যে, তিনি আমাদের হাসপাতাল তৈরির প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছেন। আমরা যতটুকু সহযোগিতা করা সম্ভব, ততটুকু করার চেষ্টা করেছি। এখন হাসপাতালটি যাতে ঠিকভাবে পরিচালিত হয়, রোগীরা যাতে কাক্সিক্ষত সেবা পান সে জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানাই। এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতা কামনা করছি। দেশ এখন কঠিন সময় পার করছে। আমরা যেন এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় যার যার জায়গা থেকে এগিয়ে আসি।’ এ সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে থেকে জাতিকে তথ্য জানানোর দায়িত্বে থাকা সাংবাদিকদের জন্য হাসপাতালে ২০০টি বেড অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রাখার জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান বসুন্ধরা এমডি।
সভাপতির বক্তৃতায় স্বাস্থ্য সচিব মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘সারা পৃথিবীর মতো বাংলাদেশও আজ হুমকির সম্মুখীন। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ এমন অনেক ঝুঁকি মোকাবিলা করেছে। কারণ আমাদের বড় শক্তি আমাদের নেতৃত্ব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই দুর্যোগ মোকাবিলায় সার্বক্ষণিক সবকিছু তদারক করছেন। শুধু স্বাস্থ্যঝুঁকি নয়, করোনার কারণে অর্থনীতি যে ক্ষতির মুখে তা কাটিয়ে উঠতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করব। এরই একটা বড় প্রমাণ বসুন্ধরা গ্রুপের মতো বড় একটি শিল্পগ্রুপ এগিয়ে এসেছে সরকারের দুর্যোগ মোকাবিলায় সহযোগিতার জন্য। এজন্য তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ। ধন্যবাদ জানাচ্ছি স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরকে, যারা দ্রুততার সঙ্গে এই কনভেনশন সিটিকে হাসপাতালে রূপান্তর করেছে।’
উল্লেখ্য, করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে সরকারকে আইসিসিবিতে ৫ হাজার শয্যার একটি সমন্বিত অস্থায়ী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মতি দিলে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল পরিদর্শন করে হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। নানা হিসাব-নিকাশ শেষে সেখানে ২ হাজার ১৩ শয্যার হাসপাতাল ও ৭১ শয্যার আইসিইউ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। আইসিসিবির সুবিশাল চারটি কনভেনশন হল ও একটি এক্সপো ট্রেড সেন্টারে দেশের অন্যতম বৃহৎ এ হাসপাতালটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করে সরকারের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর।
SOURCE : বাংলাদেশ প্রতিদিনকুড়িগ্রামে চর আলোকিত করছে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল
Bashundhara Shuvosangho School Spreading Light of Education in Kurigram Shoal
বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সুদমুক্ত ঋণ পেলো ৩০৮ জন নারী
Bashundhara Foundation Provides Interest-Free Loans to 308 Women
বসুন্ধরা শুভসংঘের সদস্যদের মধ্যে গাছের চারা বিতরণ
Saplings Distribute Among Bashundhara Shuvosangho Members
পটুয়াখালীতে বসুন্ধরা শুভসংঘের বৃক্ষরোপণ
Bashundhara Shuvosangho Holds Tree-Plantation Campaign in Patuakhali
নাটোরের ৪০ জন অসচ্ছল নারী পেলো বসুন্ধরা শুভসংঘের কাছ থেকে সেলাই মেশিন
Bashundhara Shuvosangho Give Forty Sewing Machines to Insolvent Women in Natore