All news

বসুন্ধরা গ্রুপের শিক্ষাবৃত্তি পাচ্ছে জাবির ১১৬ জন শিক্ষার্থী

বসুন্ধরা গ্রুপের শিক্ষাবৃত্তি পাচ্ছে জাবির ১১৬ জন শিক্ষার্থী

দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ সারা দেশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অসংখ্য আর্থিক অসচ্ছল শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনের ব্যয়ভার বহন করছে। বসুন্ধরা শুভসংঘের মাধ্যমে এই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে, যেখানে দরিদ্র পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীরা প্রতি মাসে পড়াশোনার খরচ পাচ্ছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী। বসুন্ধরা গ্রুপের এই সহায়তা অনেক শিক্ষার্থীর কাছেই শিক্ষাজীবন চালিয়ে যাওয়ার একমাত্র অবলম্বন হয়ে উঠেছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১৬ জন মেধাবী শিক্ষার্থী বর্তমানে বসুন্ধরা গ্রুপের শিক্ষাবৃত্তি পেয়ে নিশ্চিন্তে তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের কয়েকজনের অনুভূতি তুলে ধরা হলো:

প্রতিভা তঞ্চঙ্গা (জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ): মায়ের চাকরি হারানোর পর আর্থিক সংকটে এইচএসসিতে ভালো ফল করেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছিল। একটি এনজিওতে ছোট চাকরি করার সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েও ঢাকায় আসা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। বসুন্ধরা শুভসংঘের বৃত্তির মাধ্যমে আমার পড়াশোনার খরচ মিটেছে।

মো. সোয়াইব আহমেদ (আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ): বাবা মারা যাওয়ার পর মায়ের সীমিত পেনশনে সংসার চালানো কঠিন ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির সময় অনেকেই নিরুৎসাহিত করলেও মায়ের অনুপ্রেরণা ও বসুন্ধরা শুভসংঘের সহযোগিতায় আজ আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছি। তাদের সাহায্য শুধু আর্থিক নয়, সাহস ও বিশ্বাসের প্রতীক।

উম্মে হামিদা (অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ): চার ভাই-বোনের সংসারে বাবার একার উপার্জনে হিমশিম খেতে হতো। টিউশনি করে পড়াশোনার খরচ যোগাতে হতো, যা কঠিন ছিল। বসুন্ধরা শুভসংঘের বৃত্তি আমার সেই দুশ্চিন্তা দূর করেছে এবং পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে সাহায্য করছে।

মো. স্বাধীন হোসেন (তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউট): শৈশবে দৃষ্টিশক্তি হারানোর পর আর্থিক সংকটের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া কঠিন ছিল। বসুন্ধরা শুভসংঘের সহায়তায় আজ আমি নির্বিঘ্নে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারছি।

মেহেরীন আফরিন মিতু (আইন ও বিচার বিভাগ): কৃষক বাবার অসুস্থতা ও সংসারের আর্থিক অনটনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া কঠিন ছিল। বসুন্ধরা শুভসংঘের আর্থিক অনুদান আমার সেই দুশ্চিন্তার ভার লাঘব করেছে এবং স্বপ্ন পূরণে সাহায্য করছে।

মো. সিয়াম আলী (নৃবিজ্ঞান বিভাগ): ভাইয়ের মৃত্যুতে পরিবারে আর্থিক সংকট দেখা দিলে বসুন্ধরা শুভসংঘের শিক্ষাবৃত্তি আমার পড়াশোনার পথ সহজ করেছে। তাদের এই সহায়তার প্রতি আমি চিরকৃতজ্ঞ।

তাসনোভা ফারিন তিসা (ইংরেজি বিভাগ): বসুন্ধরা গ্রুপের এই উদ্যোগ সমাজের পিছিয়ে পড়া মেধাবী শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন পূরণে এক প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। এই বৃত্তি আমার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে এবং ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।

মো. সজিব ইসলাম (আইন ও বিচার বিভাগ): দরিদ্র পরিবারে জন্ম, আর্থিক কষ্টের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া কঠিন ছিল। বসুন্ধরা শুভসংঘের শিক্ষাবৃত্তি আমার বই, পোশাক ও খাবারের খরচ যোগাতে সাহায্য করছে।

আছিয়া খাতুন (লোকপ্রশাসন বিভাগ): কৃষক বাবার অসুস্থতার কারণে পরিবারে আর্থিক অভাব দেখা দিলে পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। বসুন্ধরা শুভসংঘের স্কলারশিপ আমার জীবনে মুক্তির দূত হয়ে এসেছে। তাদের এই সাহায্য আমার মতো হাজারো শিক্ষার্থীর স্বপ্ন বাঁচিয়ে রেখেছে।

বসুন্ধরা গ্রুপের এই মহতী উদ্যোগ দেশের মেধাবী অথচ আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। শুভসংঘের মাধ্যমে তারা শুধু আর্থিক সাহায্যই নয়, বরং শিক্ষার্থীদের মনে সাহস ও আত্মবিশ্বাস জুগিয়ে যাচ্ছে।

SOURCE : Daily Sun বাংলা