দেশের বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ প্রথমবারের মতো আয়োজন করে হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা ‘কুরআনের নূর-পাওয়ার্ড বাই বসুন্ধরা গ্রুপ’। এ প্রতিযোগিতায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে আটজন শ্রেষ্ঠ কোরআনের হাফেজকে পুরস্কৃত করা হয়। সেই বিজয়ীদের পুরস্কারের পাশাপাশি বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর বিজয়ীদের বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যদের পবিত্র ওমরাহ পালন করানোর ঘোষণা দেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে পরিবারসহ ওমরাহ পালন শেষে সৌদি আরব থেকে আজ মঙ্গলবার বিজয়ীরা দেশে ফিরেছেন।
সকাল ১০টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেন আটজন বিজয়ী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যসহ ২৫ জন। তাঁদের কাফেলায় সালমান নামের এক হাফেজের আড়াই বছর বয়সী ছোট বোন নোভা, বশির আহম্মেদের ছোট বোন সাড়ে তিন বছরের মুনিবা মেহজাবিনও মা-বাবার সঙ্গে সৌদি আরব যাওয়ার সুযোগ পায়। এর আগে ১৭ অক্টোবর তারা ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়েন।
এদিকে ওমরাহ পালনের সামর্থ্য নেই এমন আরো ১০ জন সৌদি আরবের মক্কা-মদিনায় ওমরাহ হজ পালন করে হাফেজদের সঙ্গে একই ফ্লাইটে আজ দেশে ফিরেছেন।
তাদের এই সুযোগ করে দিয়েছেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মুসল্লি কমিটির প্রধান উপদেষ্টা, বাজুস প্রেসিডেন্ট ও বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর।
বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে তাদের সবাইকে অভ্যর্থনা জানান বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মুসল্লি কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মানিক, সমাজকল্যাণ সম্পাদক নাজমুল হুদা ও বসুন্ধরা গ্রুপের ওমরাহবিষয়ক সমন্বয়ক আমির হোসেন মিয়া। তারা বলেন, ‘এখানে সবার ভাগ্য ভালো- তাঁরা তাঁদের সন্তানের সঙ্গে ওমরাহ পালন করার সুযোগ পেয়েছেন। বাংলাদেশে এত বড় আয়োজন আর কেউ করেনি।
এর আগে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর সাহেব রমজানে মুসল্লিদের জন্য প্রতিদিন বায়তুল মোকাররমে ইফতারের আয়োজন করেছেন, সামর্থ্যহীন শতাধিক ব্যক্তিকে ওমরাহ হজে পাঠিয়েছেন। যারা এসব আয়োজন সফল করার জন্য সহযোগিতা করেছে, তাদের ধন্যবাদ।’
বিমানবন্দরে কথা হলে হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা ‘কুরআনের নূর-পাওয়ার্ড বাই বসুন্ধরা গ্রুপ’ বিজয়ীদের পরিবারের সদস্যরা বলেন, ‘সন্তানের সফলতায় নবীজির দেশ দেখা এবং ওমরাহ পালন করাটা সত্যিই অনেক আনন্দের। এ জন্য বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ জানাই। তাদের জন্য সব সময় দোয়া করব।
ওমরাহ পালনের সময় বসুন্ধরা গ্রুপ কর্তৃপক্ষ ও সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য দোয়া করেছি- সৃষ্টিকর্তা যেন তাঁদের সবার মঙ্গল করেন।’
ওমরাহ শেষে বিজয়ীরা বলেন, ‘এটা স্বপ্নের মতো। এমন একটা মহৎ কাজের মাধ্যমে বসুন্ধরা গ্রুপের সহযোগিতায় মা-বাবাসহ নবীজির দেশ দেখার সুযোগ পাই। এ জন্য মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করি ও বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তাদের জন্য ওমরাহ পালন সম্ভব হয়েছে, না হয় আমাদের সবার এ সুযোগ হতো কি না জানি না। আমরা প্রত্যাশা করি, আগামীতে কুরআনের নূর আয়োজন আরো বড় পরিসরে যেন অনুষ্ঠিত হয়।’
ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার মোশাররফ হোসেন (১১) নামের এক বিজয়ী বলেন, ‘মা-বাবাকে নিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপের আয়োজনে ওমরাহ করে আসছি। খুবই ভালো লাগছে। তাদের জন্য সব সময় দোয়া করব। আল্লাহ তাদের ভালো করুক।’
আবু তালহা নামের এক বিজয়ী বলেন, ‘আমি বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সাহেবের অছিলায় মা-বাবাসহ ওমরাহ পালন করে আসছি। ওনাদের জন্য অনেক দোয়া। খুশি হয়ে ওনার জন্য একটি জায়নামাজ, আতর ও খেজুর এনেছি। উনি এগুলো গ্রহণ করলে আরো অনেক খুশি হব।’
পটুয়াখালীর বাউফল উপেজলা থেকে সন্তানের সঙ্গে ওমরাহ করে আসা নুরুল আমিন বলেন, ‘এমন উদ্যোগ গ্রহণ করায় মন থেকে বসুন্ধরা গ্রুপের জন্য কৃতজ্ঞতা। তাদের অছিলা না থাকলে স্ত্রী নিয়ে ছেলের এমন সাফল্যে মক্কা-মদিনা দেখার সুযোগ হতো না।’
গত ১ ফেব্রুয়ারি বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মুসল্লি কমিটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে রিয়ালিটি শো ‘কুরআনের নূর-পাওয়ার্ড বাই বসুন্ধরা গ্রুপ’ আয়োজনের ঘোষণা দেয়। এরপর অভাবনীয় সাড়া জাগে। সারা দেশের আনাচকানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা হাজারো মাদরাসা থেকে এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে নিবন্ধন করেছিলেন ১০ হাজারের বেশি হাফেজ। সমগ্র বাংলাদেশ থেকে নিবন্ধিত হাফেজদের মধ্য থেকে শ্রেষ্ঠত্ব বাছাইয়ে নেওয়া হয় নিখুঁত পরিকল্পনা। এর সঙ্গে যুক্ত হন দেশের নামজাদা ইসলামিক স্কলাররা। নেপথ্যে থেকে সহযোগিতা করেন বিভিন্ন মাদরাসার মুহতামিম, শিক্ষক, মসজিদের ইমাম থেকে শুরু করে নানা শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিরা। দীর্ঘ ১০০ দিনের মহা আয়োজনে অংশ নেন অন্তত ১০ হাজার হাফেজ, যাদের বয়স ১৫ বছরের নিচে। কচি-কাঁচা এ হাফেজদের অংশগ্রহণে পুরো আয়োজন ছিল বর্ণিল। শিক্ষক, অভিভাবকদের প্রাণবন্ত উপস্থিতিও ছিল দেখার মতো। প্রতিযোগিতা ছিল অত্যন্ত সুশৃঙ্খল। সব মিলিয়ে ১১টি জোনে বিভক্ত করে শুরু হয় অডিশন রাউন্ড। ১১টি জোন হলো-ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল, খুলনা ও ফরিদপুর।
প্রাথমিক অডিশন থেকে ইয়েস কার্ড পান ৪৫ জন হাফেজ। ঢাকার দুই জোন থেকে ৯ জন করে ১৮ জন এবং বাকি ৯টি জোনে তিনজন করে ২৭ জন হাফেজকে নিয়ে শুরু হয় প্রতিযোগিতার থিয়েটার রাউন্ড। থিয়েটার রাউন্ড চলে ৪ থেকে ৮ এপ্রিল। এখান থেকে সেরা ৩০ জন জায়গা করে নেন কোয়ার্টার ফাইনালে। ৯ থেকে ১৩ এপ্রিল কোয়ার্টার ফাইনাল রাউন্ড চলে। তাদের মধ্য থেকে সেরা ২০ জন জায়গা করে নেন সেমিফাইনাল রাউন্ডে। এ পর্বে প্রতিযোগিতার জন্য প্রতিযোগীদের চারটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। সেমিফাইনাল রাউন্ড শুরু হয় ২০ এপ্রিল। প্রতি গ্রুপ থেকে দুজন করে চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নেন আটজন হাফেজ। দেশবরেণ্য ইসলামিক স্কলার ও অভিজ্ঞ হাফেজদের সমন্বয়ে গঠিত বিচারকমণ্ডলী দায়িত্ব পালন করেন এবং নিখুঁতভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করে শ্রেষ্ঠত্ব নির্বাচন করেছেন।
কুরআনের হাফেজদের নিয়ে বৃহৎ এ রিয়ালিটি শো গত রমজানে প্রতিদিন নিউজ২৪ টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচারিত হয়। এর মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিল কালের কণ্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরডটকম ও ক্যাপিটাল এফএম।
Hospital for Covid-19 Patients at Bashundhara’s ICCB to Open Soon
মীরসরাই এবং কেরানীগঞ্জে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করলো বসুন্ধরা গ্রুপ
বসুন্ধরা গ্রুপ কাপ গলফ টুর্নামেন্ট ২০১৩ গলফারদের উৎসব
Dazzling Finish of Bashundhara Cup Golf Tournament 2013
Bashundhara Group Exporting Tissue to 16 Countries
Bashundhara Group Chairman Stands by Ailing Girl
Bashundhara Group Chairman Ahmed Akbar Sobhan Stands by Sick Tasmia
India Willing Partner in Bangladesh Development
Bashundhara Group Chairman Stands by Ailing Boy Siraj
Ceremony of Bashundhara Cup Golf