বুকভরা সাহস ও হাজারো স্বপ্ন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) পড়তে আসেন দেশসেরা মেধাবীরা। প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীরা এসে প্রথমেই পড়েন অর্থনৈতিক সংকটে। বর্তমান সময়ে টিউশন পাওয়াও কঠিন থেকে কঠিনতর হয়েছে। কী করবেন ভেবে দিশাহারা হন স্বপ্নদেখা তরুণরা।
ঢাবির এমনই হাজারো তরুণের ভরসা ও আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় মেধাবী অথচ অসচ্ছল শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়িয়ে শুভসংঘ তৈরি করছে নতুন ইতিহাস। দায়িত্বশীল ও মানবিক মানুষ হয়ে দেশ গঠনের অনুপ্রেরণা দিচ্ছে তরুণদের। বসুন্ধরা শুভসংঘের বৃত্তি পেয়ে নিশ্চিন্তে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া হাজারো তরুণপ্রাণ এখন নিজেকে সৃষ্টিশীল করে তুলতে ব্যস্ত। তাঁরা জানিয়েছেন ভিন্ন ভিন্ন অনুভূতি।
বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তাপ্রাপ্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের এই অনুভূতিগুলো ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরবেন জাকারিয়া জামান। প্রথম পর্ব ছাপা হলো আজ
সাদিয়া হক, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট
আমার শিক্ষাজীবনে গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক শক্তি বসুন্ধরা শুভসংঘের শিক্ষাবৃত্তি। এই বৃত্তির মাধ্যমে আমি শুধু আর্থিকভাবে সুরক্ষিত হইনি, বরং মানসিকভাবেও অনেকটা নিশ্চিন্ত। পড়ালেখার পাশাপাশি টিউশন করার ফলে মানসিক চাপ অনেক সময়ই নেতিবাচক প্রভাব ফেলত। বসুন্ধরা শুভসংঘ থেকে বৃত্তি পাওয়ার পর সেই চিন্তা দূর হয়েছে। এখন আমি পড়াশোনায় তুলনামূলক বেশি মনোযোগ দিতে পারি এবং নিজের লক্ষ্য ও স্বপ্নকে এগিয়ে নিতে পারছি। বসুন্ধরা শুভসংঘ যেভাবে দরিদ্র শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়াচ্ছে, তা আমাদের অনেক কিছু শিক্ষা দেয়। শুভসংঘ আমাদের শুধু আর্থিক সাহায্য করছে না, আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলার পথও তৈরি করে দিচ্ছে।
বসুন্ধরা শুভসংঘের এই শিক্ষাবৃত্তি আমার উচ্চশিক্ষার পথকে অনেক সহজ করেছে। আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ বসুন্ধরা শুভসংঘের প্রতি। তারা আমার মতো অনেক শিক্ষার্থীর জীবনে আলোর দিশা হয়ে উঠেছে। ভবিষ্যতে আমি চেষ্টা করব, যেন এই আস্থার মর্যাদা রাখতে পারি এবং সমাজের জন্য ভালো কিছু করতে পারি।
সাদিয়া বিনতে ছালেহ্, ইতিহাস বিভাগ
আমি, আম্মু, ছোট ভাই ও বড় বোনকে নিয়ে আমাদের পরিবার। ভাই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা বিভাগে অধ্যয়নরত। বড় বোন শারীরিক প্রতিবন্ধী। আমার বাবা ২০২০ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। বাবা আমাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে আমাদের পরিবার আর্থিকভাবে অসচ্ছল হয়ে পড়ে। মা দরজির কাজ করে তাঁর সামান্য আয়ে পরিবারের খরচ মেটান।
মায়ের সামান্য আয়ে আমাদের পড়ালেখার খরচ, পরিবারের খরচ এবং প্রতিবন্ধী বোনের খরচ চালানো অসম্ভব। শত প্রতিকূলতা পেরিয়ে আম্মুর অনুপ্রেরণায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। ঢাকা শহরে মেসের ভাড়া, খাবার এবং অন্যান্য খরচ মেটানো মায়ের পক্ষে অসম্ভব হয়ে গিয়েছিল। লেখাপড়া প্রায় ছেড়ে দেওয়ার উপক্রম হয়েছিল। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। তখনই আল্লাহর রহমতে আমি বসুন্ধরা শুভসংঘের বৃত্তির জন্য নির্বাচিত হই। এতে আমার আর্থিক সংকট লাঘব হয়। জীবনে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস পাই। বসুন্ধরা শুভসংঘের কাছে আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব।
ফাইজা জারিফ জুঁই, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার পর থেকেই আমি বসুন্ধরা শুভসংঘের বৃত্তি পাওয়া শুরু করেছি। আমার বাবা নেই। পরিবারে আমি, মা আর ছোট ভাই। আয়ের কোনো লোক নেই। তাই ঢাকায় খরচ চালানো খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার ছিল। বসুন্ধরা শুভসংঘের এই বৃত্তি আমাকে অনেক সাহায্য করেছে আর্থিক প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠতে। বৃত্তি পাওয়ার আগে আমার মা কৃষিকাজ করে সংসার চালাতেন, হাঁস-মুরগি পালন করতেন এবং বাড়ির সামনে ছোট একটি সবজির বাগান করতেন। বাবা ২০২২ সালে লিভার সিরোসিসে মারা যান।
এর পর থেকেই আমাদের আর্থিক অবস্থা শোচনীয় হয়ে ওঠে। কারণ বাবার চিকিৎসা বাবদ অনেক টাকা খরচ হয়েছিল আর আমার বাবাই ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। যেহেতু আমি হলে থাকি, তাই বৃত্তির টাকায় আমি চলতে পারি। আম্মুর কাছে আর টাকা চাইতে হয় না। আর্থিক টানাপড়েন অনেকাংশেই কমেছে। বসুন্ধরা শুভসংঘের এই বৃত্তি আমাকে পড়াশোনায় অনেক সহায়তা করছে। আমি অনেক কৃতজ্ঞ।
রুকাইয়া আফরীন, ফারসি ভাষাও সাহিত্য
আমার বাবা দীর্ঘ ছয় বছর ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত থেকে মারা গেছেন। পরিবারে এখন আমরা তিন বোন এবং মা আছেন। আয়ের কোনো উৎস নেই। একসময় মোটামুটি ভালো অবস্থা ছিল আমাদের। বাবার ক্যান্সার ধরা পড়ার পর থেকে সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। অনেক সংগ্রাম করে নিজের পড়াশোনা চালিয়ে গেছি। কারণ পরিবারের সবাই চেয়েছিল বিয়ে দিতে। আমি রাজি ছিলাম না। আল্লাহর রহমতে বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাই, কিন্তু বিপদ আমার পিছু ছাড়েনি। বড় একটি অ্যাকসিডেন্ট করে মাথায় আঘাত লাগে। ডাক্তার বেড রেস্ট দেন। জীবন থেকে একটি বছর পিছিয়ে যাই। রি-অ্যাডমিশন নিতে হয় আমাকে। পড়াশোনা করতে গেলেই কিংবা কোনো চাপ মাথায় নিলেই অনেক ব্যথা করত। এ কারণে টিউশনিও করাতে পারতাম না। বাসা থেকে এক টাকা দেওয়াও সম্ভব ছিল না। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি বসুন্ধরা শুভসংঘের বৃত্তি পাই। এখন আমি আগের থেকে সুস্থ এবং পড়াশোনাও ভালোভাবে করতে পারছি। এই বৃত্তিটা না পেলে আমি জানি না, আমার কী হতো? অভিভাবক হয়ে আমার পাশে আছে বসুন্ধরা শুভসংঘ।
ফাহামিদা আক্তার, ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ
সব সময় চেয়েছি নিজের পায়ে দাঁড়াতে, কারো মুখাপেক্ষী না হয়ে নিজেকে গড়তে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া ছিল আমার ছোটবেলার স্বপ্ন। চট্টগ্রামের এক প্রান্তিক এলাকা থেকে এই স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায় এসেছি। নতুন শহর, নতুন পরিবেশ—সবকিছুই ছিল চ্যালেঞ্জিং। এক বছর আগে জীবনের সবচেয়ে বড় অভিভাবক আমার বাবাকে হারিয়েছি। বাবাকে ছাড়া এই যাত্রাটা শুরু করা সহজ ছিল না। বড় ভাইও তখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছিলেন। তিনি নিজেও একা সংগ্রাম করছেন। ঢাকায় আসার পর শুরুতে খুব একা লাগত। অনেক সময় মনে হতো, আমি যেন দিকহীন এক নৌকা, ভাসছি অথচ কোথাও পৌঁছতে পারছি না। এই সময়েই বসুন্ধরা শুভসংঘ আমার জীবনে আশার আলো হয়ে আসে।
এই সংগঠন শুধু স্কলারশিপ দেয়নি, আমাকে দিয়েছে সাহস, আত্মবিশ্বাস এবং একটি অনুভব যে আমি একা নই। বসুন্ধরা শুভসংঘের ভাইয়া-আপুরা আপনজনের মতো পাশে থেকেছেন। তাঁদের আন্তরিকতা, সহযোগিতা আর উৎসাহ আমাকে ভেতর থেকে শক্ত করে তুলেছে। আমি আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শিখেছি, বিশ্বাস করতে শিখেছি নিজের ওপর। স্কলারশিপ পাওয়ার পর আমার মনে হয়েছে, কেউ একজন আমার সংগ্রাম ও চেষ্টার মূল্যায়ন করছেন। এখন আমি অনেক বেশি স্থির, আত্মবিশ্বাসী এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী।
আছিয়া খাতুন, যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগ
আমার পরিবারে ছয়জন সদস্য। মা-বাবা, তিন বোন ও এক ভাই। পরিবারে উপার্জন করার সদস্য শুধু আমার বাবা। তাঁর পক্ষে পুরো পরিবারের ভরণ-পোষণসহ লেখাপড়ার খরচ চালানো সম্ভব হয় না। ছোটবেলা থেকে আমার লেখাপড়ার খরচ বাবা কোনোমতে বহন করে সংসার চালাতেন। পরবর্তী সময়ে বড় ভাই টিউশন করে আমার পড়ার খরচ চালানোর চেষ্টা করতেন। এখন ভাইয়ের পড়ালেখা শেষ। তিনি চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। টিউশন করে এখন আমায় সাহায্য করতে পারছেন না। নিজে কিভাবে চলবেন, তা নিয়েই হিমশিম খাচ্ছেন। এমন অবস্থায় কী করব ভেবে পাচ্ছিলাম না।
প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য ঢাকা শহরে টিউশন পাওয়া সহজ নয়। এক বন্ধুর কাছে শুনলাম বসুন্ধরা শুভসংঘের বৃত্তির কথা। সেখানে আবেদন করি এবং বৃত্তির জন্য আমি নির্বাচিত হই। বসুন্ধরা শুভসংঘ নিয়ে এলো আমার জীবনে নতুন অধ্যায়। এই বৃত্তি আমার সঠিকভাবে পড়ালেখায় অনেক সাহায্য করে আসছে। এখন মানসিক চিন্তামুক্ত থেকে পড়ালেখা করছি। আমিও ভবিষ্যতে বসুন্ধরা শুভসংঘের মতো মহান কাজের অংশীদার হতে চাই। দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে চাই। হাজারো দরিদ্র পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে চাই।
আঁখি, দর্শন বিভাগ
আমি সিরাজগঞ্জের বেলকুচি সরকারি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট সম্পন্ন করেছি। আমার বাবা পেশায় দারোয়ান, মা গৃহিণী। চার বোনের মধ্যে আমি ছোট। বড় তিন বোন অবিবাহিত এবং সবাই লেখাপড়া করেন। বাবার মাসিক আয় ১০ হাজার টাকা মাত্র। এই সীমিত আয়ে ছয় সদস্যের পরিবারের খরচ বহন করতে বাবাকে হিমশিম খেতে হয়। সম্প্রতি বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হন। জমানো যা টাকা ছিল সব দিয়েই বাবার চিকিৎসা করি। মা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। আমি নবম শ্রেণি থেকে টিউশন করে নিজের লেখাপড়ার খরচ বহনের চেষ্টা করে আসছিলাম। পরিশ্রম করেছি এবং মহান আল্লাহ তাআলার ওপর ভরসা রেখেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু এখানে লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে যাওয়া সহজ ছিল না। ঢাকায় এসে কোনো টিউশন পাইনি।
অনেক চেষ্টা করেছি একটি টিউশন জোগাড় করার, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি। আমার বড় বোন পাবনা মেডিক্যাল কলেজে তৃতীয় বর্ষে পড়েন। তিনি টিউশন করে যে সামান্য আয় করতেন, তা দিয়ে আমার খরচ চালাতাম। বসুন্ধরা শুভসংঘের শিক্ষাবৃত্তি আমার কাছে আশীর্বাদস্বরূপ। যদি বৃত্তিটি না পেতাম, তবে খুবই মানবেতর জীবন যাপন করতে হতো। হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে বসুন্ধরা শুভসংঘ বৃত্তি দিয়ে স্বপ্নপূরণের পথ করে দিয়েছে। মানুষের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তর করার কারিগর বসুন্ধরা গ্রুপ।
ঐশী চক্রবর্ত্তী, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ
আমার বাবা একজন দিনমজুর। বর্তমানে বার্ধক্যজনিত সমস্যার কারণে তেমন কাজ করতে পারেন না। আমরা তিন বোন। তিনজনই পড়াশোনা করছি। বাবার স্বল্প আয় দিয়ে পরিবারের ভরণ-পোষণ বহন করার পর ঢাকায় আমার পড়াশোনার খরচ দেওয়া তাঁর পক্ষে কষ্টসাধ্য ছিল। ঢাকায় নতুন, তাই টিউশনও পাচ্ছিলাম না। আর্থিক অবস্থা নিয়ে চিন্তিত থাকায় পড়াশোনায়ও ঠিকমতো মনোযোগ দিতে পারছিলাম না। হঠাৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পারলাম বসুন্ধরা শুভসংঘের কথা। সেই থেকে বসুন্ধরা শুভসংঘ আমার জীবনে আশার আলো হয়ে এলো। আমাকে প্রতি মাসে বৃত্তির ব্যবস্থা করে দিল। তাদের প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব।
আমার মতো হাজারো শিক্ষার্থীর জন্য এত ভালো একটা উদ্যাগ নিয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ। বর্তমানে আমি ভালোভাবে পড়াশোনা ও যাবতীয় খরচ সুন্দরভাবে চালিয়ে যেতে পারছি। আমার পরিবারও অত্যন্ত খুশি। বসুন্ধরা শুভসংঘ এভাবেই তাদের ভালো কাজগুলো দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিক। আরো এগিয়ে যাক বসুন্ধরা শুভসংঘ—এই প্রার্থনা করি, যাতে দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে না পড়ে।
ফাহমিদা জিনাত মুক্তা, বাংলা বিভাগ
নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান হওয়ায় বাবার পক্ষে আমার খরচ বহন করা অনেক কষ্ট হতো। বাবা মারাত্মক অসুস্থ। তাই আমার পড়ার খরচ চালানো অসম্ভব হয়ে যাচ্ছিল। যেহেতু আমি সাহিত্যের শিক্ষার্থী, তাই আমার প্রতিনিয়ত অনেক বই কিনতে হয়। মাসে অনেক টাকা চলে যায় বই কেনার পেছনে। শুভসংঘের এই বৃত্তিটি পাওয়ার পর আমার অনেক উপকার হয়েছে। ঢাকার মতো ব্যয়বহুল শহরে অল্প খরচে চালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলেও খুব একটা পেরে ওঠা যায় না। ডিপার্টমেন্ট ফি, পরীক্ষার ফি—এগুলো তো আছেই। বসুন্ধরা শুভসংঘের বৃত্তি পাওয়ার পর এসব নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারি। দরিদ্র মেধাবীদের পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে বসুন্ধরা শুভসংঘকে আমার অনন্য মনে হয়। আশা রাখি, বসুন্ধরা শুভসংঘ হাজারো শিক্ষার্থীর সফলতার অংশ।
নওশিন জাহান সুবর্ণা, ইংলিশ ফর স্পিকারস অব আদার ল্যাঙ্গুয়েজ
সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার মেয়ে আমি। বাবা বেঁচে নেই, মা গৃহিণী। আমাদের পরিবার খুবই অসচ্ছল। অসুস্থ থাকায় আমি টিউশন করে নিজের খরচ চালাব, তা-ও পারছি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই কষ্টের জীবনের মধ্যে বসুন্ধরা শুভসংঘ আমার জন্য আলোর বার্তা নিয়ে আসে। প্রতি মাসে বৃত্তি দিয়ে তারা আমার পাশে দাঁড়ায়। এই শিক্ষাবৃত্তি আমার ও আমার পরিবারের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। বসুন্ধরা শুভসংঘ আমার চলার পথকে অনেক সহজ করে দিয়েছে। আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি বসুন্ধরা শুভসংঘের প্রতি। তাদের এই বৃত্তি আমার শিক্ষাজীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক হিসেবে কাজ করছে। এটি শুধু আর্থিক সহায়তা নয়, বরং আমার আত্মবিশ্বাস ও অনুপ্রেরণার উৎস।
মাহফুজা আক্তার মিম, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট
আমি বসুন্ধরা শুভসংঘ থেকে বৃত্তিপ্রাপ্ত একজন শিক্ষার্থী। ২০২১ সালে আমার বাবা মারা যান। এর পর থেকেই আমাদের আর্থিক অবস্থার অবনতি হয়। আম্মুর পক্ষে দুজনের লেখাপড়ার খরচ জোগানো অনেক কষ্টসাধ্য। বসুন্ধরা শুভসংঘ থেকে বৃত্তি পাওয়ার পর নিশ্চিন্তে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারছি। আমি ও আমার পরিবার সব সময় চেষ্টা করি পরিশ্রম করে, লড়াই করে জীবনে এগিয়ে যেতে। কিন্তু আর্থিক জটিলতা আমাদের পিছু ছাড়ছিল না। অনেক সময় মানসিক সমস্যায় ভুগেছি। আমাদের চাষাবাদের কোনো জমি নেই। আম্মু কিছু কাজ করে সংসার চালান। এই অন্ধকারের মধ্যে বসুন্ধরা শুভসংঘ আমার জীবনে আলোর মতো আসে। আমাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করে। তাদের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা। আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন মানুষের মতো মানুষ হয়ে আপনাদের সঙ্গে সম্মিলিত চেষ্টায় দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের সাহায্য করতে পারি।
শিরিন আক্তার, উর্দু বিভাগ
পড়াশোনা আমার জীবনের অনেক সংগ্রামের অধ্যায়। বাবা দরিদ্র কৃষক। বাবার আয় দিয়ে আমাদের ভরণ-পোষণই ছিল খুব কষ্টসাধ্য। এ কারণে দশম শ্রেণিতে থাকা অবস্থায় টিউশন করে নিজের পড়াশোনার ব্যয় বহন করতে হয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর যখন কোনো টিউশন পাচ্ছিলাম না, তখন এক ব্যাচমেটের মাধ্যমে জানতে পারি বসুন্ধরা শুভসংঘের কথা। আবেদন করি। নির্বাচিত হয়ে প্রতি মাসে বৃত্তি পাওয়া শুরু করি। বসুন্ধরা শুভসংঘের কারণে আমি দ্বিতীয় বর্ষ থেকে পড়াশোনা ভালোভাবে চালিয়ে যেতে পারছি। উর্দু বিভাগে পড়ার কারণে যখন কোনো টিউশন পাচ্ছিলাম না, তখন পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া আমার পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। তখন থেকেই পড়াশোনা চালিয়ে নেওয়ার জন্য বসুন্ধরা শুভসংঘের বৃত্তি আমাকে অনেক সাপোর্ট করেছে। আমার শিক্ষার পথকে সহজ করতে পাশে আছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। আমার স্বপ্নপূরণের পথে এক দৃঢ় ভিত্তি তৈরি করছে। আমি যথাযথভাবে আরো মনোযোগী হয়ে পড়াশোনা করতে পারছি।
SOURCE : বাংলাদেশ প্রতিদিনদরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভরসার নাম বসুন্ধরা গ্রুপ
Bashundhara Group A Trusted Name for Underprivileged Meritorious Students
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে
Tree Plantation Campaign Held at Rajshahi University
সৈয়দপুরে বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে গাছের চারা রোপণ
Tree Plantation Initiative by Bashundhara Shuvosangho in Saidpur
উপকূলের অসহায় নারীদের পাশে বসুন্ধরা গ্রুপ
Bashundhara Group Stands by Vulnerable Women on the Coast
বসুন্ধরা গ্রুপের উদ্যোগে উপকূলীয় দরিদ্র নারীদের প্রশিক্ষণ ও সেলাই মেশিন প্রদান
Bashundhara Group Provides Training and Sewing Machines to Poor Coastal Women