বসুন্ধরার করোনা হাসপাতাল চালু শিগগিরই

দেশে প্রতিদিনই বাড়ছে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী, সেই সঙ্গে দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিলও। এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসা নিয়ে দুশ্চিন্তায় সাধারণ মানুষ। তবে স্বস্তির খবর হচ্ছে, কভিড-১৯ আক্রান্তের চিকিৎসায় রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) নির্মিত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম হাসপাতাল বা আইসোলেশন সেন্টার শিগগিরই উদ্বোধন হতে যাচ্ছে।
এরই মধ্যে সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্ট পরিচালক, উপপরিচালক, নার্সসহ অন্যদের নিয়োগ দেওয়ার কাজ প্রায় শেষ। দায়িত্বও বুঝে নিচ্ছেন কর্মকর্তারা। এখন দাপ্তরিক কাজ শেষে হাসপাতালটি উদ্বোধনের অপেক্ষা। এরপরই পুরোদমে রোগীদের সেবা দেওয়া শুরু হবে।
আইসিসিবির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এম এম জসীম উদ্দিন গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘হাসপাতালের সব কাজ প্রায় শেষ। এখন চলছে করোনাভাইরাস আক্রান্তদের সঠিক চিকিৎসা দেওয়ার কর্মপরিকল্পনা। আশা করি সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ তারিখ জানালে খুব দ্রুত হাসপাতালটি উদ্বোধন করা হবে। আমাদের প্রস্তুতি মোটামুটি শেষ।’
তিনি বলেন, ‘শেষ মুহৃর্তের দাপ্তরিক কাজ চলছে। হাসপাতালের পরিচালক, চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য নিয়োগের যে বিষয়গুলো রয়েছে, এখন সেগুলো প্রায় শেষের দিকে। অনেককেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তারা আইসিসিবি হাসপাতালের পাশেই একটি ভবনে অফিসও করছেন।’
হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালে মোট আইসোলেশন বেড হবে দুই হাজার ১৩টি। ছয় ক্লাস্টারে এক হাজার ৪৮৮টি বেড বসবে। এ ছাড়া তিনটি কনভেনশন হলে থাকবে আরো ৫২৫টি বেড। এর বাইরে চার নম্বর হলে হবে ৭১ বেডের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)। এ ছাড়া দেড় হাজার রোগীকে অক্সিজেন দেওয়া যাবে এমন ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে সরকারকে আইসিসিবিতে পাঁচ হাজার শয্যার একটি সমন্বিত অস্থায়ী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মতি দিলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল পরিদর্শন করে হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সেখানে দুই হাজার ১৩ শয্যার হাসপাতাল ও ৭১ শয্যার আইসিইউ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
আনন্দবাজার পত্রিকায় বসুন্ধরা হাসপাতালের প্রশংসা
এদিকে বসুন্ধরার করোনা হাসপাতালের প্রশংসা করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতের বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা। উহানের পর মাত্র ২১ দিনে দুই হাজার ১৩ বেডের হাসপাতাল প্রস্তুত করাকে ‘চমক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে কলকাতার প্রভাবশালী পত্রিকাটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, উহানে ১০ দিনে করোনা আক্রান্তদের জন্য হাসপাতাল বানিয়ে চমকে দিয়েছিল চীন। এরপর আরেক চমক তৈরি করল বাংলাদেশের উদ্যোক্তাগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ ও দেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২১ দিনে তারা প্রস্তুত করে ফেলেছে দুই হাজার ১৩ বেডের অস্থায়ী হাসপাতাল।
এ সম্পর্কে আনন্দবাজার পত্রিকাকে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর জানান, দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের চিকিৎসায় শুধু সরকারের উদ্যোগই নয়, দেশের প্রধান বেসরকারি শিল্প-উদ্যোক্তাদেরও সামাজিক দায়বদ্ধতা রয়েছে, মানুষের প্রতি সেই দায়বোধ থেকেই তাঁরা এগিয়ে এসেছেন।