নিরাপদে এলপি গ্যাস ব্যবহারের কৌশল জানলেন সাভারের গৃহিণীরা

সাভারের সিন্দুরিয়া এলাকার গৃহিণী শাহনাজ বেগম দীর্ঘদিন ধরে পরিবারের রান্নার কাজে বসুন্ধরা এলপি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করলেও জানতেন না এই গ্যাস সিলিন্ডারের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা রয়েছে। গতকাল তিনি প্রথম জানতে পারলেন সিলিন্ডার খালি হোক অথবা পূর্ণ হোক, ব্যবহারের পর সিলিন্ডারের সেফটি ক্যাপ লাগিয়ে রাখতে হয়। তিনি জানতেন না গ্যাস সিলিন্ডার সরাসরি সূর্যের আলো, বৃষ্টি এবং তাপ থেকে দূরে রাখতে হয়।
গতকাল বুধবার সাভারের হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত একটি রেস্তোরাঁয় এলপি গ্যাস সিলিন্ডার দুর্ঘটনা প্রতিরোধে এবং এই গ্যাস ব্যবহারবিষয়ক জনসচেতনতা তৈরি করার লক্ষ্যে বসুন্ধরা এলপি গ্যাসের উদ্যোগে আয়োজিত এক নিরাপদ নিবাস ক্যাম্পেইনে উপস্থিত হয়ে শাহনাজ বেগম এসব কৌশল শিখেছেন বলে জানান। শুধু শাহনাজ নন, এলাকার ৪৫ জন গৃহিণী এই ক্যাম্পেইনে যোগ দেন। আশুলিয়ার উত্তর জামসিং এলাকার সাবিনা ইয়াসমিন, বড়ওয়ালিয়া এলাকার চাঁদনী, সাভারের হিন্দু ভাকুর্তার আমেনা বেগম, খাগুরিয়ার মাহেলাসহ আরো অনেকেই শিখেছেন। গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের পর অবশ্যই সিলিন্ডারের রেগুলেটরের সুইচ বন্ধ রাখতে হয়, রান্নার সময় নাইলনের জামাকাপড় পরিহার করতে হয়, কখনোই বদ্ধস্থানে সিলিন্ডার রাখা উচিত নয়, সিলিন্ডার লিক করলে জানালা খুলে দিতে হবে, লিক পরীক্ষা করার জন্য ম্যাচ অথবা লাইটার ব্যবহার না করে সাবান অথবা শ্যাম্পু মিশ্রিত পানি দিয়ে সিলিন্ডারের লিক পরীক্ষা করতে হবে।
এ ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএলপিজিএল ও এসআইসিএলের জেনারেল ম্যানেজার মীর টি আই ফারুক। অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা এলপি গ্যাসের পক্ষে আরো উপস্থিত ছিলেন ডিভিশনাল ম্যানেজার আহাম্মেদ আলী রিপন, ব্র্যান্ড বিভাগের মো. আরিফ সিদ্দিক, স্থানীয় পরিবেশক হাফেজ নূর মোহাম্মদসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার স্থানীয় ব্যক্তিরা।
ক্যাম্পেইনে উপস্থিত বক্তারা সাম্প্রতিক সময়ে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কারণ এবং প্রতিকারের বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে তাঁদের অভিমত ব্যক্ত করেন। বক্তারা জানান, এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ প্রতিরোধে বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর যথাযথ মান নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ব্যবহারকারীদের সচেতনতার বিষয়টিও অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
বক্তারা আরো বলেন, বেশ কিছু কম্পানির নিজস্ব রি-টেস্টিং ও পর্যাপ্ত মান নিয়ন্ত্রণের সুব্যবস্থা না থাকায় ওই সব কম্পানি স্বল্প মূল্যে পুরনো ও নিম্নমানের সিলিন্ডার নিয়মিতভাবেই বাজারজাত করে যাচ্ছে। এর ফলে ব্যবহারকারীরা তাঁদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা আরো বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দেশের বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ গ্যাস রিফিলিং করে এলপি গ্যাস বাজারজাত করছে। এর ফলে সিলিন্ডার লিকেজ ও দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। অবৈধ রিফিলিং রোধ করতে বক্তারা কম্পানি, ব্যবসায়ী ও ব্যবহারকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণের পাশাপাশি এর বিপক্ষে জনমত গড়ে তোলার আহ্বান জানান। উপরন্তু ভোক্তাদের কেবল স্বীকৃত ডিলার বা রিটেইলার পয়েন্ট থেকে সিলিন্ডার কেনার পরামর্শ দেন। অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে জানানো হয়, করপোরেট দায়বদ্ধতাকে প্রাধান্য দিয়েই বসুন্ধরা এলপি গ্যাস লিমিটেড দেশব্যাপী নিরাপত্তাবিষয়ক প্রচারণা ‘নিরাপদ নিবাস’ ক্যাম্পেইন চালু করেছে এবং দেশব্যাপী এ ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হবে।