নিয়োগ চলছে অনেকে অফিসও করছেন

সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে পরিচালক, উপপরিচালক, নার্সসহ অন্যদের নিয়োগ দেওয়ার কাজ চলছে পুরোদমে। এরই মধ্যে যাঁরা নিয়োগ পেয়েছেন তাঁরা নিজ নিজ দায়িত্ব বুঝে নিচ্ছেন। ছক কষছেন কিভাবে পুরোদমে সচল রাখবেন করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) আক্রান্তদের চিকিৎসায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) নির্মিত হাসপাতাল বা আইসোলেশন সেন্টারটিকে। এসব দাপ্তরিক কাজ শেষে দ্রুতই উদ্বোধন করা হচ্ছে এটি।
আইসিসিবির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এম এম জসীম উদ্দিন গতকাল মঙ্গলবার আইসিসিবি হাসপাতালের সর্বশেষ এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘গত ৪ মে হাসপাতালটি উদ্বোধনের কথা সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়েছিল। সেটি হয়নি। আশা করি চলতি সপ্তাহেই উদ্বোধনের নতুন তারিখ সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ জানাবে।’
হাসপাতালের অগ্রগতি সম্পর্কে জসীম উদ্দিন বলেন, শেষ মুহূর্তের দাপ্তরিক কাজ চলছে। একটি প্রতিষ্ঠান চালাতে হলে পরিচালক, চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য নিয়োগের যে বিষয়গুলো রয়েছে সেগুলো চলমান। অনেককেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা আইসিসিবি হাসপাতালের পাশেই একটি ভবনে অফিসও করছেন।
তিনি জানান, হাসপাতালে মোট আইসোলেশন বেড হবে দুই হাজার ১৩টি। ছয় ক্লাস্টারে এক হাজার ৪৮৮টি বেড বসবে। এ ছাড়া তিনটি কনভেনশন হলে থাকবে আরো ৫২৫টি বেড। এর বাইরে চার নম্বর হলে হবে ৭১ বেডের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)। এ ছাড়া দেড় হাজার রোগীকে অক্সিজেন দেওয়া যাবে এমন ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। অক্সিজেন যে মেশিন সাপ্লাই করবে সেটি দুই-এক দিনের মধ্যে প্রস্তুত হয়ে যাবে।
গত সোমবার আইসিসিবিতে নির্মিত করোনা হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আজই (৪ মে) চালু হওয়ার কথা ছিল। কেন হচ্ছে না এটা আমি সঠিক বলতে পারব না। এটা সরকারের ওপর নির্ভর করছে। হাসপাতাল পরিচালনার দায়িত্ব আমাদের না। এটা সরকার নিয়েছে। আমাদের কাজ ছিল ফ্যাসিলিটিজ (নির্মাণ সুবিধা) দেওয়া, আমরা দিয়ে দিয়েছি। এখন সরকার করবে পুরোটা।’
সায়েম সোবহান আরো বলেন, ‘এই আইসোলেশন সেন্টার বা হাসপাতালটি শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের মধ্যেই দ্বিতীয় বৃহত্তম। এই দুর্যোগের সময়ে জাতির জন্য কিছু করতে পেরে আমরা গর্বিত। করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কর্মসূচি থেকে বসুন্ধরা গ্রুপ এটা করেছে।’
প্রসঙ্গত, করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে সরকারকে আইসিসিবিতে পাঁচ হাজার শয্যার একটি সমন্বিত অস্থায়ী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মতি দিলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল পরিদর্শন করে হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। নানা হিসাব-নিকাশ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সেখানে দুই হাজার ১৩ শয্যার হাসপাতাল ও ৭১ শয্যার আইসিইউ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আইসিসিবির সুবিশাল চারটি কনভেনশন হল ও একটি এক্সপো ট্রেড সেন্টারে হাসপাতালটির নির্মাণকাজ ১২ এপ্রিল থেকে বাস্তবায়ন করছে সরকারের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।