নিউজ টোয়েন্টিফোরের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু

জমকালো এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করল সংবাদভিত্তিক বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘নিউজ টোয়েন্টিফোর’। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিকালে বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বসুন্ধরা ও ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। অতিথি হিসেবে বিশিষ্ট শিল্পপতি ও যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে আনুষ্ঠানিক সম্প্রচারের উদ্বোধনের পর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, মিডিয়া দেশকে যেমন এগিয়ে দিতে পারে, তেমনি পিছিয়েও দিতে পারে। মিডিয়ার মাধ্যমে যেমন দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা যায়, তেমনি হেটও করা যায়। আমরা চাই, মিডিয়া দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করুক। তিনি বলেন, মিডিয়ার স্বাধীনতা মানে এই নয় যে, যা খুশি প্রচার করা। স্বাধীনতার মানে এই না, জনগণের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচার করা। গণমাধ্যমের কাজ হচ্ছে সরকারকে সহযোগিতা করা। মিডিয়া দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলে দেশের সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে মানুষ জানতে পারবে। মিডিয়ায় সত্য জিনিসকে সত্যভাবে প্রচার করতে হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই দেশে বেসরকারি খাতে অনেকগুলো টেলিভিশন চ্যানেল দিয়েছেন। সেই ধারাবাহিকতার নিউজ টোয়েন্টিফোরও একটি। আমার প্রত্যাশা চ্যানেলটি স্বাধীনতার চেতনা বুকে ধারণ করে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কথা বলবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অগ্রসর হবে। দায়িত্বশীল সংবাদ মাধ্যমের ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন, মিডিয়াকে দায়িত্বশীল হতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে কোনো নিউজের মাধ্যমে যেন কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হন। তোফায়েল আহমেদ বলেন, আজকের বাংলাদেশ এমনিতে পাওয়া নয়। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আজকের বাংলাদেশ।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নিউজ টোয়েন্টিফোরের যাত্রা শুরু হল। এ টেলিভিশনটির যাত্রা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে। অনেক টেলিভিশন অনুমোদনে যেমন সমালোচনাও হয়েছে, তেমনি প্রশংসাও কুড়িয়েছে। বর্তমান সরকার মিডিয়ার স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে বলেই এসব টিভি চ্যানেলের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এসব চ্যানেল নিজেদের দক্ষতা, যোগ্যতা ও মেধা দিয়ে দর্শকদের মন জয় করার প্রতিযোগিতায় থাকবে। তিনি বলেন, বসুন্ধরার অন্যান্য মিডিয়ার মতো এ চ্যানলটিও গণমানুষের হৃদয় জয় করবে বলে আমার বিশ্বাস।
বসুন্ধরা ও ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান দেশ উন্নতি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, ব্যবসাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। প্রশ্ন হল- কেন আমরা মিডিয়ায় এলাম। কারণ আমরা দেশটাকে আরও অনেক সমৃদ্ধশালী ও সুন্দর দেখতে চাই। ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের সংবাদভিত্তিক চ্যানেল নিউজ টোয়েন্টিফোর আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা করতে পারায় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। কারণ প্রধানমন্ত্রীই এ টিভি চ্যানেলের অনুমতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশটাকে ইতিবাচকভাবে তুলে ধরতে চাই। আমাদের মিডিয়ার মাধ্যমে বিদেশের মানুষ যেন মনে করে, দেশটা ভালোভাবে এ গিয়ে যাচ্ছে।
বিশিষ্ট শিল্পপতি ও যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি গণমাধ্যমরই মানুষের সেবা করার মানসিকতা থাকতে হয়। একটি মহৎ কাজে বড় পরিসরে বিনিয়োগ চাইলেই যে কেউ করতে পারেন না। এজন্য মহৎ উদ্দেশ্য থাকতে হয়। তিনি বলেন, আজকে একটি সুন্দর দিন। নিউজ টোয়েন্টিফোরের নতুন যাত্রার দিন। বসুন্ধরা গ্রুপের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী শিল্প প্রতিষ্ঠান এ চ্যানেলটির কর্ণধার। তিনি বলেন, মিডিয়া সৃষ্টি ও পরিচালনা খুবই ব্যয়বহুল। এ প্রতিযোগিতার যুগে বসুন্ধরার মতো একটি প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এসেছে দেখে আমি আনন্দিত। তিনি নতুন এ চ্যানেলের সাফল্য কামনা করেন।
ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরার গুলনকশা হলের এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর, যমুনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম ইসলাম, রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। স্বাগত বক্তব্য দেন নিউজ টোয়েন্টিফোরের সিইও নঈম নিজাম। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন চ্যানেলটির কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এডিটর সামিয়া রহমান। রাতে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক, দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, বন ও পরিবেশ উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়কসম্পাদক ক্যাপ্টেন (অব.) তাজুল ইসলাম, উপপ্রচার সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, জাসদ (আম্বিয়া) কার্যকরী সভাপতি মাঈনুদ্দিন খান বাদল এমপি, বিএনপির প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুক, এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আকতার, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপিকা অপু উকিল, শামীম ওসমান এমপি, গাজী গোলাম দস্তগীর এমপি, নাইমুর রহমান দুর্জয় এমপি, পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ এমপি, যুবলীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক ব্যারিস্টার সাজ্জাদ হায়দার লিটন। এছাড়া শুভেচ্ছা জানান, র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া, র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খানসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা। বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট বাসেত মজুমদার, শ ম রেজাউল করিম প্রমুখ। গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- দৈনিক কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, ডেইলি সানের সম্পাদক জামিলুর রহমান, একাত্তর টেলিভিশনের সিইও মোজাম্মেল বাবু, ইশতিয়াক রেজা, এশিয়া টেলিভিশনের হারুনুর রশিদ, কোয়াবের সভাপতি এসএম আনোয়ার পারভেজ প্রমুখ।