Pre-loader logo

নতুন প্রতিভার সন্ধানে বসুন্ধরা কিংস

নতুন প্রতিভার সন্ধানে বসুন্ধরা কিংস

প্রিমিয়ারের নবাগত দলটির কার্যক্রম অবশ্য এ অনূর্ধ্ব-১৮ টুর্নামেন্টেই সীমিত নয়। সম্প্র্রতি রংপুরে অনূর্ধ্ব-১২ ফুটবল টুর্নামেন্ট করেছে তরা। মানিক, কামাল বাবুরা সেখানে গিয়েও খেলোয়াড় বাছাই করে এসেছেন। অর্থাৎ নতুন ফুটবলার তৈরিতে একেবারে গোড়াতেই হাত দিয়েছেন তারা। এই দেশের ক্লাব ফুটবলে যা নতুন উদাহরণ।
ক্রীড়া প্রতিবেদক : একদল গোলরক্ষককে নিয়ে মাঠের এক পাশে কাজ করছেন দুই কোচ রাজু ও সেলিম। অন্য প্রান্তে সৈয়দ গোলাম জিলানী আরেক দলকে ছোট পাসের কৌশল দেখাচ্ছিলেন। পাশেই কামাল বাবু, ‘হেড আপ, হেড আপ’ বলে চিৎকার করছেন, তাঁর মনোযোগ উইথ দ্য বল রানিংয়ে থাকা আরেকটা দলের ওপর। টাচলাইন ধরে কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক গভীর মনোযোগে পুরো মাঠে চোখ বোলাচ্ছেন। বলা যায়, দেশের সব জহুরির চোখ এক হয়েছে বসুন্ধরা কিংসের জন্য খেলোয়াড় বাছাইয়ে।
এ মৌসুমেই প্রিমিয়ার লিগ খেলতে যাওয়া কিংস আগামীবার খেলবে পেশাদার ক্লাবগুলোর বয়সভিত্তিক আসর অনূর্ধ্ব-১৭ চ্যাম্পিয়নশিপ। তার জন্যই খেলোয়াড় বাছাইয়ের তোড়জোড় গত মার্চ থেকে। অনলাইনে আবেদন আহ্বানের পর সাড়া দিয়েছিল পাঁচ হাজারের মতো কিশোর তরুণ। সেখান থেকেই প্রায় এক হাজার ৫০০ জনকে নিয়ে মাসব্যাপী প্রাথমিক বাছাই চালিয়ে ২২২ জনকে তারা ‘ইয়েস কার্ড’ দিয়েছে। যাদের নিয়ে কাল থেকেই শুরু হলো দ্বিতীয় পর্ব। কাল মাঠে ছিল ৫৪ জন ফুটবলার। আজও দ্বিতীয় দফায় নিজেদের মেলে ধরার চেষ্টায় থাকবে দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা এ ফুটবলাররা। বিকেলে দেওয়া হবে ‘ইয়েস প্লাস কার্ড।’ ১০ জন পাবে তা। মোট সাতটি গ্রুপ করা হয়েছে। প্রতিটি গ্রুপের খেলোয়াড়রাই দুই দিন সময় পাচ্ছে নিজেদের ফুটবল সামর্থ্য প্রমাণের। প্রধান কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক তাঁদের বাছাইয়ের ধরন নিয়ে বলছিলেন, ‘প্রাথমিক বাছাইয়ে একনজরের দেখাতেই আমরা ইয়েস কার্ড দিয়ে দিয়েছিলাম। এ দফায় আমরা সব কোচ মিলে একেকজন খেলোয়াড়কে তুলে নেব। এ দুই দিনে ওদের আরো ঘনিষ্ঠভাবে দেখব আমরা। যাদের মধ্যে বড় ফুটবলার হওয়ার প্রতিভা আছে, এমনদেরই শুধু জায়গা দিচ্ছি আমাদের তালিকায়। মাঠে মৌলিক জিনিসগুলো দেখার পাশাপাশি ওদের অফ দ্য ফিল্ড আচরণও আমরা মার্ক করছি।’ বসুন্ধরা কিংসের ব্যবস্থাপনাতেই আবাসিকভাবে হচ্ছে এ ট্রায়াল। এক গ্রুপ ট্রায়াল দিয়ে ফিরে গেলে নতুন গ্রুপ যোগ দেবে। প্রতি গ্রুপের জন্য দুই দিন হিসেবে দ্বিতীয় পর্বের এই বাছাই কার্যক্রম ১৪ দিনের। তার মধ্যেই বেছে নেওয়া হবে ৬০ ফুটবলারকে। তারাও চূড়ান্ত নয়। চূড়ান্ত দলটা হবে ৩০ থেকে ৪০ জনের। তৃতীয় দফায় আরেকটা ট্রায়াল শেষেই সেরা সেই খেলোয়াড়দের পেয়ে যাবে কিংস। তারাই অংশ নেবে আগামী অনূর্ধ্ব-১৭ চ্যাম্পিয়নশিপে।
এ বাছাই কার্যক্রমের শুরুতেও অবশ্য সেই টুর্নামেন্ট অনূর্ধ্ব-১৮ বছরের খেলোয়াড়দের নিয়ে হবে বলে জানা ছিল। গত টুর্নামেন্টটাও হয়েছে এই বয়সসীমায়। সেই হিসাবে ব্যাপক পরিসরে বাছাইপ্রক্রিয়াটা শুরু করে কিংস মাঝপথে কিনা জানতে পারছে আগামী টুর্নামেন্টা আর অনূর্ধ্ব-১৮ বছর বয়সীদের হবে না, তা হয়ে যাচ্ছে অনূর্ধ্ব-১৭ বছর বয়সীদের। তার মানে মানিকরা যে ২২২ জনকে ডেকেছেন, তাদের অনেকেই সেই টুর্নামেন্টে আর খেলার সুযোগ পাবে না। বাফুফের অদূরদর্শিতায় ক্লাব এতে ক্ষতির মুখে পড়ল বলে মানিক যারপরনাই হতাশ, ‘এ সিদ্ধান্ত আমাদের পুরো কার্যক্রমটাকেই ব্যাহত করেছে।’ তৃণমূলের কোচ বলা হয় কামাল বাবুকে। পেশাদার ফুটবলে অনেক নতুন প্রতিভা উপহার দিয়েছেন তিনি। বসুন্ধরা কিংসের এমন ব্যাপক আয়োজনে তিনিও মুগ্ধ, ‘সত্যি বলতে নতুন খেলোয়াড়দের তুলে আনায় কোনো ক্লাবকে এতটা আন্তরিক কখনো দেখিনি। আমাদের সবারই উচিত ওদের নিরুৎসাহিত না করে বরং যতটা সম্ভব সমর্থন দিয়ে যাওয়া।’ অনূর্ধ্ব-১৫ সাফজয়ী কোচ জিলানী সফল ছোটদের ঘরোয়া আসরেও। তাঁর হাত ধরেই সর্বশেষ অনূর্ধ্ব-১৮ টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতেছে আবাহনী। কিংসের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনিও দারুণ আশাবাদী, ‘বাছাইয়ের পর খেলোয়াড়দের পরিচর্যাটাও ঠিক থাকলে কিংস নিশ্চিতভাবেই অসাধারণ একটা দল পেতে যাচ্ছে হাতে।’
প্রিমিয়ারের নবাগত দলটির কার্যক্রম অবশ্য এ অনূর্ধ্ব-১৮ টুর্নামেন্টেই সীমিত নয়। সম্প্র্রতি রংপুরে অনূর্ধ্ব-১২ ফুটবল টুর্নামেন্ট করেছে তরা। মানিক, কামাল বাবুরা সেখানে গিয়েও খেলোয়াড় বাছাই করে এসেছেন। অর্থাৎ নতুন ফুটবলার তৈরিতে একেবারে গোড়াতেই হাত দিয়েছেন তারা। এই দেশের ক্লাব ফুটবলে যা নতুন উদাহরণ।

Copyright © 2023 Sayem Sobhan Anvir.
All Rights Reserved.