তিন সপ্তাহে তৈরি হলো দেশের বৃহত্তম করোনা হাসপাতাল

করোনাভাইরাসজনিত রোগ কভিড-১৯-এ আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) হাসপাতালের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে তিন সপ্তাহে। দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের জমি ও অবকাঠামো ব্যবহার করে হাসপাতাল বানানোর মূল কাজটি করছে সরকারের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। চীন সরকার উহানে এ ধরনের একটি হাসপাতাল নির্মাণ করেছিল ১০ দিনে। হাসপাতলাটি আগামীকাল শনিবার
উদ্বোধন হতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এইচইডির) নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুল আলম।
আইসিসিবির চারটি কনভেনশন সেন্টার ও একটি ট্রেড সেন্টারে গড়ে উঠেছে দেশের সবচেয়ে বড় এ হাসপাতাল।
হাসপাতালটির অবকাঠামো আগেই বানানো ছিল। শুধু বসানো হয়েছে শয্যা ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি।
গতকাল বৃহস্পতিবার এইচইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, হাসপাতালের অবকাঠামোগত কাজ আমরা শতভাগ শেষ করে ফেলেছি। এখানে পরিচালক, সহকারী পরিচালক নিয়োগ হয়েছে। এখন তাদের হাতে হাতে সবকিছু বুঝিয়ে দেব। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যখন মনে করবে, তখন চালু করবে।
তিনি আরও বলেন, ‘অফিস থেকে জানতে পেরেছি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ৯ মে দুপুর ১২টায় হাসপাতালটির উদ্বোধনের দিনক্ষণ ঠিক করেছে। আমরা সেই অপেক্ষায় আছি এবং শতভাগ প্রস্তুত আছি। আমরা যতটুকু শুনেছি ডাক্তার-নার্স নিয়োগ হয়ে গেছে। কী কী সহায়ক জনবল দরকার সেটা নিয়োগ দিয়ে হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব এখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের।’
প্রকৌশলী মাসুদুল আলম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দুজন কর্মকর্তা অনানুষ্ঠানিক সফরে হাসপাতালটি ঘুরে গেছেন। আমরা তাদের সবকিছু দেখিয়েছি। তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ধারণা করছি, প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে হাসপাতালটির উদ্বোধন করতে পারেন।’
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান বলেন, ‘মন্ত্রী ৯ মে দুপুর ১২টায় উদ্বোধনের দিনক্ষণ ঠিক করেছেন। কে উদ্বোধন করবেন সেটা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে পরে তিনি ঠিক করবেন।’
আইসিসিবির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এম এম জসীম উদ্দিন বলেন, ‘৯ মে উদ্বোধনের কথা মৌখিকভাবে শুনেছি। তবে এখনো চিঠি পাইনি। এর আগে ৪ মে উদ্বোধনের একটা তারিখ পেয়েছিলাম। তবে সেটা হয়নি। তাই চিঠি না পেয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু বলতে পারছি না।’
করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসাসেবা দিতে সরকারকে আইসিসিবিতে পাঁচ হাজার শয্যার একটি সমন্বিত অস্থায়ী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মতি দিলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল পরিদর্শন করে হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। নানা হিসাব-নিকাশ শেষে সেখানে ২ হাজার ১৩ শয্যার হাসপাতাল ও ৭১ শয্যার নিবিড পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আইসিসিবির সুবিশাল চারটি কনভেনশন হল ও একটি এক্সপো ট্রেড সেন্টারে দেশের অন্যতম বৃহৎ এ হাসপাতালটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে সরকারের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
কভিড-১৯ বিপর্যয় শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং সরকারের যত দিন ব্যবহারের প্রয়োজন শেষ না হবে, তত দিন বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে আইসিসিবিকে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে। বসুন্ধরার কাছ থেকে আইসিসিবির সব স্থাপনা বুঝে নিয়ে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালে রূপ দিতে গত ১৪ এপ্রিল কাজ শুরু করে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (এইচইডি)।