টগি ওয়ার্ল্ডের নবযাত্রা

একঝাঁক শিশুর প্রাণবন্ত উপস্থিতিতে উচ্ছ্বাসমুখর হয়ে উঠল বিনোদনকেন্দ্রটি। রাজধানীর ফ্ল্যাটবন্দি জীবনযাপন আর মাঠবিহীন বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করা শিশুরা একটুখানি আনন্দ উপভোগের সুযোগ পেয়ে মুহূর্তেই মাতিয়ে তুলল পুরো প্রাঙ্গণ। কেউ দৌড়ে গিয়ে চেপে বসল তেজি ঘোড়ার পিঠে, কেউবা চড়ল নাগরদোলায়। শিশুদের আনন্দে মাতিয়ে তোলার এই আয়োজন রাজধানীর বৃহত্তম শপিং মল বসুন্ধরা সিটিতে। নবরূপে যাত্রা শুরু করল দেশের বৃহত্তম ইনডোর থিম পার্ক ‘টগি ওয়ার্ল্ড’।
‘প্রাণবন্ত জীবনের সব প্রয়োজনে বসুন্ধরা সিটি’—এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে বসুন্ধরা সিটিতে কেনাকাটা ও বিনোদনের পাশাপাশি ছোট্ট সোনামনিদের খুশিকে পরিপূর্ণ করতে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হলো টগি ওয়ার্ল্ড। বসুন্ধরা সিটির লেভেল ৮ ও ৯-এ এই থিম পার্কের অবস্থান।
বসুন্ধরা সিটিতে থিম পার্ক যাত্রা শুরু করেছিল গত ১৪ এপ্রিল। তবে গতকাল শুক্রবার আরো আকর্ষণীয় রূপে নতুন উদ্যমে এর নবযাত্রা হলো। ৩৭ হাজার বর্গফুট এলাকাজুড়ে সাজানো আধুনিক ও বৈচিত্র্যপূর্ণ এই পার্কে রয়েছে ১৫টি আকর্ষণীয় রাইড, ৪৩টি গেমস এবং কিডস ও ভিআইপি বোলিং। এখানে রয়েছে ৫০টি শিশু-কিশোর ধারণ ক্ষমতার একটি পার্টিরুম।
গতকালের নবযাত্রায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার। বিশেষ অতিথি ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন। এ ছাড়া বক্তব্য দেন বসুন্ধরা সিটির ঊর্ধ্বতন নির্বাহী পরিচালক (হিসাব) ও ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ শেখ আবদুল আলিম, বসুন্ধরা গ্রুপের ঊর্ধ্বতন নির্বাহী পরিচালক এবং মানবসম্পদ ও প্রশাসন প্রধান, ইডাব্লিউপিডি ক্যাপ্টেন শেখ এহসান রেজা (অব.), ইডাব্লিউএমজিএল প্রেস প্রধান এম. এম. জসিমউদ্দিন, বিভাগীয় প্রধান (ব্র্যান্ড ও মার্কেটিং) বিএলপিজিএল মেজর মো. মোহসিনুল করিম (অব.), বসুন্ধরা গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার ও টগি ওয়ার্ল্ডের ইনচার্জ হানিফ আবদুল হাকিমসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় এই শিল্প গ্রুপের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
চিত্রশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার বলেন, ‘আমাদের বাচ্চারা অনেক বুদ্ধিমান। কিন্তু তাদের বন্দি করে রাখা হচ্ছে। বাচ্চাদের খেলার জায়গা নেই, বেড়ানোর জায়গা নেই। তাদের ইচ্ছেমতো নিজের জগতে ছাড়তে হবে। এই টগি ওয়ার্ল্ড বাচ্চাদের সেই সুযোগ করে দেবে।’
ইমদাদুল হক মিলন বলেন, ‘রাজধানীতে খেলার মাঠ নেই, হাঁটাহাঁটির জায়গা নেই। বাচ্চাদের আনন্দ উপকরণ নেই। তবে বসুন্ধরা গ্রুপ বাচ্চাদের জন্য একটি বড় উদ্যোগ নিয়েছে। এই টগি ওয়ার্ল্ডে বাচ্চাদের সারা দিন কাটানোর সুযোগ রয়েছে। এখন অভিভাবকরা বাচ্চাদের দিয়ে প্রতিযোগিতা করান। বাচ্চাকে জিপিএ ৫ পাওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। কিন্তু প্রকৃত জ্ঞানার্জন করল কি না তা দেখা হয় না।’
স্বাগত বক্তব্যে টগি ওয়ার্ল্ড সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন হানিফ আবদুল হাকিম। তিনি বলেন, ‘শিশু-কিশোরদের জন্য নতুন আঙ্গিকে থাইল্যান্ডের একটি বিখ্যাত পার্কের আদলে এই থিম পার্কের যাত্রা শুরু। এই প্রথমবারের মতো বাচ্চাদের জন্য চালু হয়েছে কিডস বোলিং। আর বাচ্চাদের পার্টি মানে শুধু খাওয়া-দাওয়া নয়, সারা দিনই বিভিন্ন রাইডে চড়ে আনন্দ উপভোগের সুযোগ রয়েছে। এই পার্কে রয়েছে সফট প্লে জোন, যা বাচ্চাদের মানসিক বিকাশে সহায়তা করবে। বড়দের জন্যও রয়েছে বিভিন্ন রাইড। এই পার্কে রয়েছে বিখ্যাত বৃহত্তম কাবাব চেইন ইন্দোনেশিয়ার বাবা রাফির আউটলেট।’
গতকালের অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিশুদের ফ্রি রাইড ও গেমস উপভোগের সুযোগ দেওয়া হয়। এ ছাড়া প্রতিটি শিশুর জন্যই ছিল গিফট বক্স।